প্রীতি পোদ্দার, মুর্শিদাবাদ: এই মুহুর্তে রাজ্যে ‘তরুণের স্বপ্ন প্রকল্প’ (Taruner Swapna) নিয়ে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। কোনো কোনো স্কুলের একাংশের ছাত্র ছাত্রীদের টাকা হস্তান্তর হয়ে যাচ্ছে অন্য অ্যাকাউন্টে। আবার কোনো কোনো ছাত্র ছাত্রীর অ্যাকাউন্টে অতিরিক্ত টাকা ঢুকছে। যা নিয়ে বেশ চাপের মুখে পড়েছে শিক্ষা দফতর। কিন্তু একের পর এক তদন্ত করা হলেও এখনো বোঝা যাচ্ছে না সমস্যাটা ঠিক কোন জায়গায়। আর এদিকে অতিরিক্ত টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাওয়ায় তা ফ্রিজ করতে ব্যাঙ্কগুলিকে চিঠি পাঠাল জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক।
দু’দুবার প্রকল্পের টাকা ঢুকল অ্যাকাউন্টে!
বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ জেলায় ১৭টি স্কুলের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ উঠে এসেছে। সেখানে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ৪,৮৪১ জন ছাত্রছাত্রীকে ৪ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা বাড়তি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এর ফলে জেলায় বাকি স্কুলগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের ট্যাবের ১০ হাজার করে টাকা এখনও হাতে পায়নি। জানা গিয়েছে যে সকল স্কুলগুলি ট্যাবের টাকা দু’বার করে পেয়েছে, সেই স্কুলগুলো হল আমতলা হাই স্কুল, আমতলা আনন্দমনি বালিকা বিদ্যালয়, ডাঙাপাড়া মোক্তারপুর হাই স্কুল, টুঙ্গি স্বামী স্বরূপানন্দ হাই স্কুল, বালি গান্ধী মেমোরিয়াল হাই স্কুল, বৃন্দাবনপুর এস স্মৃতি হাই স্কুল, দুর্লভপুর হাই স্কুল, সর্বাঙ্গপুর জেকেএসএ বিদ্যাপীঠ। তাই এবার সেই অতিরিক্ত টাকা ঢোকার প্রসঙ্গ নিয়ে ব্যাঙ্কগুলিকে পাঠানো হল চিঠি।
ব্যাঙ্কে চিঠি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের
সূত্রের খবর, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক অমরকুমার শীল ব্যাঙ্কগুলিকে পাঠানো চিঠির সঙ্গে জেলার মোট ১৭টি হাই স্কুলের প্রতিটি ছাত্রছাত্রীর নাম, আইডি নম্বর, বাবার নাম এবং প্রত্যেকের বাড়ির ফোন নম্বর, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর-সহ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য পাঠিয়েছেন। এবং ওই চিঠির মাধ্যমে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে, “৪,৮৪১ জন ছাত্রছাত্রীর অ্যাকাউন্টে দু’বার করে টাকা পাঠানো হয়েছে। তাই প্রতিটি ছাত্রছাত্রীর অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ হাজার টাকা এইমুহুর্তে ‘হোল্ড’ বা ‘ফ্রিজ’ যেন করে দেওয়া হয়।
প্রতিটি ব্যাঙ্কে পাঠানো সেই একই চিঠি আবার ওই ১৭টি হাই স্কুলকেও পাঠানো হয়েছে। জানা গিয়েছিল নির্দেশ অনুযায়ী স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের তালিকা তুলে দিয়েছিল জেলা শিক্ষা বিভাগে। সেখান থেকে অনুমোদিত সেই তালিকা পৌঁছে গিয়েছিল ট্রেজারিতে। বহরমপুর ট্রেজারি থেকে টাকার দেওয়ার নির্দেশ ব্যাঙ্কে পাঠানোর কথা। সেক্ষেত্রে ভুলটা এর মধ্যে কোথায় হয়েছে তারই সন্ধানে শুরু হয়েছে তদন্ত। এদিকে তৃণমূলের মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জঙ্গিপুর জেলা সভাপতি আশরফ আলি রেজভি বলেন, “ভুল কোনও একটা জায়গায় তো ঘটেছেই। তবে স্কুলগুলির কোনও ভুল নেই। ভুল হওয়ার সম্ভাবনা জেলা শিক্ষা বিভাগ বা ট্রেজারিতে। এটা খতিয়ে দেখা উচিত যাতে ভবিষ্যতে এই ভুল না ঘটে।”