প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ইতিমধ্যেই গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে বাংলার বাড়ি (Banglar Bari) প্রকল্পের প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। আর তার দৌলতেই এবার ১২ লক্ষ বাড়ির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হল গরীব এবং মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য সাশ্রয়ী আবাসন তৈরি করা। কিন্তু সমীক্ষার সময় এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত অনেক জায়গায় কাটমানির অভিযোগ উঠেছিল। তাই অন্যান্য প্রকল্পের মত এই প্রকল্পে যাতে কোনো দুর্নীতির ছায়া পড়তে না পারে তার জন্য নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।
বিডিওদের ওপর দেওয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব
আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে দলের কোনো নেতা যেন সংযুক্ত না থাকেন। উপভোক্তারা যেন নিজেরাই বাড়ি তৈরির কাজটি করেন। সেক্ষেত্রে কোনও মধ্যস্থতাকারীর সহযোগিতা যেন না নেন। আর তাই সেই সূত্রে নবান্ন তড়িঘড়ি একটি নির্দেশিকা জারি করল। সেই নির্দেশিকায় বিডিওদের বলা হয়েছে যে বাড়ি তৈরির কাজ শুরুর আগে নিজ নিজ ব্লকের মার্কেট কমিটি এবং বাড়ি তৈরির উপকরণের বিক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। কারণ ইতিমধ্যেই যেহেতু বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে সেক্ষেত্রে বাড়ি নির্মাণের সামগ্রী যেমন ইট, বালি, স্টোনচিপ, অ্যাসবেস্টস ইত্যাদির দাম আচমকা বাড়িয়ে দিতে পারে ব্যবসায়ীরা। তাই সেক্ষেত্রে যাতে এমন কাজ না হয় তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিডিও দের।
জিও ট্যাগিং ব্যবস্থার মাধ্যমে রিপোর্ট জমা দিতে হবে
এছাড়াও নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে যে বিভিন্ন জেলার বিডিও রা এক্ষেত্রে প্রয়োজনে সরবরাহকারীদের সঙ্গে বৈঠক করে সামগ্রী মজুত এবং সরবরাহ করার ব্যবস্থা ঠিক করতে পারেন। পাশাপাশি আবাস নির্মাণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কঠোর নজরদারির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। জেলা, ব্লক এবং গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে প্রতি মাসে অন্তত এক বার নির্মাণকাজ পরিদর্শন করে অ্যাপ-ভিত্তিক জিও ট্যাগিং ব্যবস্থার মাধ্যমে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। আশা করা যাচ্ছে এই পদক্ষেপগুলির মাধ্যমে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে উপভোক্তারা দ্রুত বাড়ি নির্মাণ করার পাশাপাশি প্রকল্পটি স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে এক দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ তৈরি করবে।
জানা গিয়েছে, প্রথম কিস্তি হিসেবে দেওয়া ৬০ হাজার টাকার মাধ্যমে বাড়ি তৈরির প্রথম পর্যায়ের কাজ আগামী ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। সেক্ষেত্রে কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক হলে তবেই উপভোক্তাদের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ বরাদ্দ করা হবে। রাজ্য সরকার চায়, উপভোক্তারা যেন কোনও হয়রানি ছাড়াই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাড়ি নির্মাণ শেষ করতে পারেন। তাই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে বিডিও দের।












