কলকাতাঃ মিটিং, মিছিলে স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদের এখন হাঁটতে দেখা যায়। সেইসঙ্গে অবস্থান, বিক্ষোভ করতেও দেখা গিয়েছে নানা সময়ে। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে বাংলা তথা সমগ্র দেশ। এই ঘটনার প্রতিবাদে এমন কোনও মানুষ নেই হয়তো যিনি রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান নি। বাদ যায়নি স্কুল পড়ুয়াড়াও। আর এবার এই বিষয় নিয়েই উষ্মা প্রকাশ করল নবান্ন। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন।
আন্দোলনে স্কুল পড়ুয়াদের ‘ব্যবহার’!
বিক্ষোভ, আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াতে স্কুল পড়ুয়াদের রীতিমতো ‘ব্যবহার’ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে নবান্ন। কলকাতা শহর থেকে শুরু জেলায় জেলায় ‘নির্ভয়া’ কাণ্ডের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে। চলছে বিক্ষোভ প্রদর্শন। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি এখন বাংলার মেয়ের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে স্কুল পড়ুয়ারাও। আর এই ঘটনাই প্রশাসনের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এহেন অবস্থায় এবার বিক্ষোভ, আন্দোলন কর্মসূচিতে পড়ুয়াদের অংশগ্রহণ নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসনগুলিকে নির্দেশ দিল নবান্নের সর্বোচ্চ মহল।
বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের
সাম্প্রতিক হয়ে যাওয়া এক বৈঠকে প্রশাসনিক কর্তাদের নাকি মুখ্যসচিব বলেছেন, রাস্তা অবরোধ-সহ একাধিক কর্মসূচিতে স্কুল পড়ুয়াদের ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা বরদাস্ত করা হবে না। কোথায় এমন ঘটছে, তা খুঁজে বার করে এমন প্রবণতা ঠেকাতে হবে। কড়া পদক্ষেপ করতে হবে। প্রশাসনের নির্দেশিকা , স্কুল শিক্ষা দফতরের কর্মসূচি ছাড়া অন্য কোনও কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারবে না কোনও পড়ুয়া।
২ স্কুলকে মিছিলের অনুমতি দিল না পুলিশ
জানা গিয়েছে, আরজি কর ঘটনার প্রতিবাদে বর্ধমানের দুটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল গত ১৮ আগস্ট একটি প্রতিবাদ মিছিল করার জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়। তবে পুলিশের তরফ থেকে সেই মিছিলের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এদিকে ২১ আগস্ট ফের মিছিলের জন্যে অনুমতি চাওয়া হয়। তবে এবারও দুটি স্কুলকে খালি হাতে ফিরতে হয়। এরপরেই কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় স্কুলগুলি।
আরও পড়ুনঃ ২৭ তারিখ ছাত্র সমাজের নবান্ন অভিযানকে সমর্থন নির্যাতিতার বাবা, মায়ের! পথে নামবেন তাঁরাও
এদিকে এহেন ঘটনায় সরব হয়েছে স্কুলগুলি। কারণ সুপ্রিম কোর্ট গত মঙ্গলবার মামলার শুনানি চলাকালীন সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছিল যে আন্দোলনকারীদের ওপর কোনও আক্রমণ বা মিটিং মিছিলে কোনওরকম পুলিশের তরফে বলপ্রয়োগ করা যাবে না। এই বিষয়ে একটি স্কুলের চেয়ারম্যান সঞ্জয় গুপ্তা জানান, মিছিলে অংশ নিতে ইচ্ছুক শিক্ষক, স্কুলের অশিক্ষ কর্মী, অভিভাবক, পড়ুয়া সবাই। তাও পুলিশ অনুমতি দিচ্ছে না। তবে অনুমতি না মিললেও ২৩ অগস্ট তারা মিছিল বের করবেন বলে জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই বিষয়টি পুলিশকে লিখিত আকারে জানানো হয়েছে। এছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি, পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসকদের সেই চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে।