প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: একের পর দুর্নীতি জেনেগেই রয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। কয়লা পাচার, গোরু পাচার, রেশন দুর্নীতি থেকে শুরু করে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক মামলায় জর্জরিত গোটা বাংলা। এদিকে বছর ঘুরতেই বিধানসভা নির্বাচন। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সিংহাসন যাতে শাসকদলের কোনোভাবেই হাতছাড়া না হয় সেই কারণে এবার নানা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা শুরু করল সরকার। আর এই আবহে এবার রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলিতে কালো টাকা উদ্ধার করার জন্য বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে পশিমবঙ্গ সরকার।
নবান্নের তরফে পাঠানো হয়েছে নির্দেশ
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোন ব্যাঙ্কে কত অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তার মধ্যে কতগুলোয় দীর্ঘদিন টাকা-প্রদান হয়নি, কতগুলো অ্যাকাউন্ট থেকে বড় অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে–এইসমস্ত তথ্য রাজ্যের সমস্ত সমবায় ব্যাঙ্কগুলোর থেকে চেয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রতিটি সমবায় ব্যাঙ্কে থাকা সন্দেহজনক অ্যাকাউন্টগুলির তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে। আর এই তথ্য পাঠানোর নির্দিষ্ট সময়সীমাও উল্লেখ করা হয়েছে নির্দেশিকায়। জানা গিয়েছে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে সমস্ত তথ্য জমা দিতে হবে।
আসলে গত বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী কালো টাকা উদ্ধার নিয়ে বড় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তিনি জানিয়েছিলেন, রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলিতে অনেক ভুয়ো অ্যাকাউন্টে হিসেব বহির্ভূত টাকা রয়েছে। সঠিক ভাবে তদন্ত করা হলে অনেক কালো টাকা উদ্ধার করা যাবে। তাই সেই অনুযায়ী রাজ্যের ছোট-বড় প্রতিটি সমবায় ব্যাঙ্কে গত ২২ মাসের একলপ্তে বড়সড় অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের যাবতীয় তথ্য চেয়ে নির্দেশিকা জারি হয়েছে। এবিষয়ে একটি আলাদা বৈঠক করেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। সেখানেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে সমস্ত সমবায় ব্যাঙ্কগুলিতে সন্দেহজনক অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
KYC বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
এছাড়াও রাজ্য সরকার সমবায় ব্যাঙ্কগুলিতে স্বচ্ছতা আনতে এবং কালো টাকা উদ্ধার করতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি সন্দেহজনক অ্যাকাউন্ট চিহ্নিতকরণ থেকে শুরু করে গ্রাহকদের KYC বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে সমবায় ব্যাঙ্কগুলির গ্রাহকদের মধ্যে কত জনের KYC নেই, তাঁরা যেন আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আধার যাচাই সহ KYC সংক্রান্ত কাজ শেষ করে ফেলতে পারে। আশা করা হচ্ছে এই উদ্যোগগুলি রাজ্যের আর্থিক ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে।