প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কোনো সরকারি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক অথবা শিক্ষাকর্মী হতে গেলে B.Ed বা D.El.Ed কোর্স করতে হয়। এই দুই কোর্স পুরোপুরি কমপ্লিট করা বাধ্যতামূলক। আর আগের নিয়ম অনুযায়ী, এবারেও বিএড প্রশিক্ষিতরাও প্রাথমিকের শিক্ষক পদে চাকরি পাবেন। তবে এবার চাকরি পাওয়ার আগে আরও এক কোর্স করার প্রসঙ্গ উঠে এল। আর সেটি হল ব্রিজ কোর্স। দীর্ঘ দিন ধরে B.Ed করে আসা প্রাথমিক শিক্ষকদের এই ‘ব্রিজ কোর্স’ করানোর দাবি উঠে আসছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এই ব্রিজ কোর্স বহু বছর বন্ধ করে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠে এসেছে।
ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করল NCTE
জানা গিয়েছে দেশ জুড়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের এ বার ‘ব্রিজ কোর্স’ করানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শুধুমাত্র প্রাথমিকে যে সকল শিক্ষক বিএড ডিগ্রি নিয়ে শিক্ষকতা করছেন, মূলত তাঁদের প্রত্যেককে এই ছ’মাসের প্রশিক্ষণ বা ‘ব্রিজ কোর্স’ করতে হবে বলে জানা হয়েছে। শীর্ষ আদালত তথা সুপ্রিম কোর্ট অনেক আগেই এই ব্রিজ কোর্স করানোর নির্দেশ দিয়েছিল। এবার সেই নির্দেশ পালন করতেই ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করল ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন বা NCTE।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী জানা গিয়েছে সেই কমিটিতে রয়েছেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মণীশ ওয়াধওয়া, কল্যাণী আকালামকাম, হায়দরাবাদের মৌলানা আজাদ উর্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম ভানাজা, এনসিইআরটি-র ঊষা শর্মা, এনসিটিইর সিনিয়র অ্যাকাডেমিক কনসালট্যান্ট আশা সুন্দরম, অ্যাকাডেমিক কনসালট্যান্ট সোহিলা বক্সী। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে ৩০ দিনের মধ্যে তাদের রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এবং সমস্ত রাজ্যকে NCTE-র এই নির্দেশে মান্যতা দিতে হবে বলেও স্পষ্ট সেই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ৩১ জানুয়ারি শেষ সুযোগ, রাজ্য সরকারের জনদরদি প্রকল্পে নাম লেখালেন ২১ লক্ষ মানুষ
এই কোর্সে দ্বিগুণ লাভ হবে প্রাথমিক শিক্ষকদের
জানা গিয়েছে এই ব্রিজ কোর্সের প্রশিক্ষণ নিলে শিক্ষকদের বেতনও বৃদ্ধি পাবে। এই প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক পৃথা বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘‘রাজ্য সরকার প্রাথমিক শিক্ষকদের এই কোর্স নিয়ে কোনও ভাবনাচিন্তা না করায় শিক্ষকেরা আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। এনসিটিই এই নিয়ম চালু করলে শিক্ষকেরা এই ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে উপকৃত হবেন।’’ কিন্তু রাজ্যে এনসিটিই স্বীকৃত এমন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই, যেখান থেকে ওই কোর্স করা যাবে।
আরও পড়ুনঃ সিগন্যাল নেই? এবার যেকোনো নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারবেন BSNL, Jio, Airtel-র গ্রাহকরা
শুধু তাই নয়, বহু শিক্ষক ওই ব্রিজ কোর্স না করা সত্ত্বেও ‘এ’ ক্যাটিগরি স্কেলে বেতন পাচ্ছেন। এমন অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় আপাতত রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ। তবে রাজ্য সরকার এখনও এই বিষয়ে রিপোর্ট জমা দিতে পারেনি। রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যের সমস্ত প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কাছে এই ব্যাপারে তলব করা হয়েছে। সেই তথ্য পেলেই খুব শীঘ্রই এই ব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট দেওয়া যাবে।