ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: প্রতিদিন জিনিসপত্রের দাম যে হারে বেড়ে চলেছে তাতে মাথায় হাত পড়েছে আম জনতার। তার উপর চিকিৎসা খরচ যেন আকাশছোঁয়া। তাই সেই দিক বিচার করে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে দেশের নাগরিকদের স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য চালু করা হয়েছিল আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প। কিন্তু ২০১৮ সালে এই প্রকল্প চালু হলেও এখনও পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে তা চালু হয়নি। এর পিছনে আসল কারণটি ছিল রাজ্য কেন্দ্র সংঘাত। কিন্তু এই সংঘাত এবার বড় বিপদ ডেকে আনতে চলেছে রাজ্য সরকারের ওপর।
গত রবিবার কল্যাণী AIIMS এ আয়োজিত হয় একটি অনুষ্ঠান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন NMC-র আন্ডারগ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন বোর্ডের সভাপতি অরুণা ভানিকর। এছাড়াও এদিন এই অনুষ্ঠানে সরকারি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও শুধুমাত্র উপস্থিত ছিলেন SSKM এর অধিকর্তা এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ।
রাজ্য সরকারকে হুমকি NMC- র!
জানা যায় এদিন অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্য সরকারের প্রতি ক্ষোভ উগরে দেন NMC-র আন্ডারগ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন বোর্ডের সভাপতি অরুণা ভানিকর। সকল দেশবাসীর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা অনুমোদিত এক স্বাস্থ্য প্রকল্প ‘আয়ুষ্মান ভারত’ এখনও পর্যন্ত বঙ্গে চালু করা হয়নি। যার ফলে অধিকাংশ বঙ্গবাসীর কাছেই আভা আইডি কার্ড কিংবা নম্বর নেই। এবার সেই বিষয় নিয়েই আপত্তি জানান ভানিকর। তিনি বলেন, ‘আয়ুষ্মান ভারত কার্ড ছাড়া চিকিৎসা করানো হলে তা কোনও ভাবেই গ্রাহ্য করবে না কেন্দ্রীয় সরকার।’
এনএমসি-র এক আধিকারিক এই মন্তব্য পরে ব্যাখা করে বলেন, ধরা যাক কোনও সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল একবছরে আউটডোর-ইন্ডোর মিলিয়ে ১০ হাজার রোগী চিকিৎসা করল। বছর শেষে NMC যখন সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের মূল্যায়ন করবে কোনও নম্বরই দেবে না। ফলে কেন্দ্রীয় অনুদান পাওয়াও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। এদিকে পশ্চিমবঙ্গে এখনও চালু হয়নি আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প। সেক্ষেত্রে কেন্দ্র যদি আভা-আইডি ছাড়া রোগীকে স্বীকৃতি না দেয় তাহলে বহু ক্ষতির মুখে পড়তে পারে মেডিক্যাল কলেজগুলি। কারণ, রোগী সংখ্যার উপর নির্ভর করে কলেজগুলির MBBS আসন নির্মিত হয়।
কী বলছেন রাজ্য স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা?
এদিকে AIIMS এর ওই অনুষ্ঠানে মঞ্চে দেখা গিয়েছিল বিতর্কিত কার্তিক মহারাজকে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা নিয়ে তিনি চিকিৎসদের সরকারি আলোচনাসভায় কী করছেন তা নিয়ে বেশ জলঘোলা হয়ে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, চিকিৎসকদের মানসিক ধৈর্যের দরকার। তবেই রোগীরা ভাল থাকবেন। NMC এর এই বার্তা প্রসঙ্গে রাজ্য স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা ডা.কৌস্তভ নায়েককে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন,‘প্রতিনিধিদের থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পরেই স্বাস্থ্যভবন অবস্থান জানাবে।’
আরও পড়ুনঃ কর্মীদের বড় ঝটকা! বকেয়া DA, DR দেওয়া সম্ভব নয়, স্পষ্ট জানাল সরকার
অন্যদিকে ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের বিরুদ্ধেও গুরুতর অভিযোগ এনেছে NMC। এনএমসি-র এথিক্স অ্যান্ড রেজিস্ট্রেশন বোর্ডের সদস্য বিজয়লক্ষ্মী নাগের অভিযোগ, ‘রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল তথ্য দেয় না। এথিক্স ফাইল চেয়ে পাঠালে দেয় না। ফলে কাজ করতে সমস্যা হয়।’ এছাড়াও জাল সার্টিফিকেট নিয়েও এবং একই নম্বরে ৩-৪ জন চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন হওয়া নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।