পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ দীর্ঘ অপেক্ষার পর শনিবার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সঞ্জয় রায়কে দোষী ঘোষণা করা হয়। তবে সেদিন সাজা ঘোষণা হয়নি, আজ সোমবার দুপুরে শিয়ালদহ আদালতে সাজা শোনালেন বিচারপতি অনির্বাণ দাস। আদালতের বাইরে রাস্তায় ভিড় জমা গিয়েছে, তাদের সকলের দাবি ফাঁসি চাই। অনেকেই ভেবেছিলেন হয়তো তেমনটাই সাজা দেওয়া হবে, কিন্তু না জানা যাচ্ছে ফাঁসি নয় বরং মৃত্যুর আগে পর্যন্ত আজীবন কারাদন্ড দেওয়া হল দোষী সঞ্জয় রায়কে।
আরজি কর মামলায় সঞ্জয় রায়ের সাজা ঘোষণা করল আদালত
আজ শিয়ালদহ অতিরিক্ত দায়রা আদালতে উঠেছিল আরজি করের ধর্ষণ ও খুনের মামলা। দুপুর পৌনে তিনটে নাগাদ আরজি কর মামলার সাজা ঘোষণা করা হল। বিচারপতি সঞ্জয় রায়কে মৃত্যুদন্ড নয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি দিলেন। অবশ্য এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার পথ এখনও খোলা আছে।
সাজা ঘোষণার আগে সঞ্জয়ের বক্তব্য শুনতে চাওয়া হয়। তখন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে সঞ্জয় জানান, ‘আমি কিছুই করিনি। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে, আগের দিনেও বলেছি। আমি শুনেছি, অনেক কিছু নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা ছিল। মারধর করেছে, যা ইচ্ছা করে যেখানে খুশি সই করিয়ে নিয়েছে’।
কেন মৃত্যুদণ্ডের বদলে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হল?
এদিন সাজা ঘোষণার আগে বিকালৰপতি জানান, সঞ্জয়ের অপরাধ ‘বিরলতম’ নয়। তাই তাকে মৃত্যুদন্ড নয় আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হল। সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে সিবিআই ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা ৬৪, ধারা ৬৬ ও ধারা ১০৩ (১) অনুযায়ী মামলা করেছিল। সেই সমস্ত ধারায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরেই এই শাস্তি ঘোষণা করা হল। একইসাথে নিহত চিকিৎসকের পরিবারকে ১৭ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে আদেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফ থেকে।
আরও পড়ুনঃ ১৫ মাসের বকেয়া, জামিন পেয়েই বিধানসভায় বেতন তুলতে জ্যোতিপ্রিয়
প্রসঙ্গত, ৯ই অগাস্ট ২০২৪ তারিখে আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তারিতে পাথরটা গ্রাজুয়েট ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। নৃশংস এই ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিল সাধারণ মানুষ থেকেসেলিব্রিটিরাও। সেই ঘটনার ৫ মাস ১১ দিনের মাথায় দোষী প্রমাণিত হয়ে শাস্তি পেল সঞ্জয় রায়। যদিও মামলার শুরু থেকেই সিবিআই তদন্তে খুব একটা খুশি নয় নির্যাতিতার পরিবার। আজ যাবজ্জীবন কারাদন্ড ঘোষণার হওয়ার পরেও অনেকের মতে, এই মামলা আরও চলবে।