প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দেখতে দেখতে পাঁচ মাসের মুখে পড়তে চলেছে আরজি কর কাণ্ডের ঘটনা। আরজি করের চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার জেরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। ঘটনার অভিঘাত এমনই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েছে যে, রাজ্য ছাড়িয়ে সারা দেশে এই নিয়ে চলছে তোলপাড় । দিকে দিকে প্রতিবাদে নেমেছিল সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে তারকারা। কিন্তু এখনো মেলেনি সঠিক বিচার। আর এই আবহেই এবার ধৃত সঞ্জয় রাইয়ের ফাঁসির সাজার দাবি জানাল খোদ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (Central Bureau of Investigation)।
সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবি CBI এর!
গত বছর ৪ নভেম্বর, আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের মামলায় চার্জ গঠনের দিন, প্রিজন ভ্যান থেকে প্রথমবার মুখ খুলেছিল আরজি কর কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত সঞ্জয় রাই। শোনা গিয়েছিল কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার বিনীত গোয়েলের নাম। এছাড়াও সে দাবি করেছিল, তার কথা শোনা হচ্ছে না। প্রশাসন তাকে জোর করে ফাঁসিয়েছে। কিন্তু সেই ছবি এখন সম্পূর্ণ অন্যরকম। গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত সঞ্জয় রাইয়ের বিচারপর্বে CBI এর যুক্তি দিয়ে বক্তব্য পেশ বা ‘আর্গুমেন্ট’ শেষ হয়। আর তাতেই দাবি ওঠে সঞ্জয়ের ফাঁসির। ইতিমধ্যে শিয়ালদহে এডিজে আদালতে অভিযুক্ত সঞ্জয় রাইয়ের বিরুদ্ধে বিচারপর্ব চলছে। তাই এদিন সঞ্জয়কে আদালতের রুদ্ধদ্বার কক্ষে হাজির করানো হয়।
ফরেনসিক রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য
আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের তদন্তে সিবিআইয়ের আইনজীবী যুক্তি দিয়ে আদালতকে জানায় যে, এই ধর্ষণ ও খুনের অভিযুক্ত সঞ্জয় রাইয়ের বিরুদ্ধে অনেক প্রমাণ রয়েছে। সঙ্গে তিনি এও বিশ্লেষণ করেন যে কেন CBI সঞ্জয়কে অভিযুক্ত হিসাবে গণ্য করছেন। আইনজীবীর মতে নির্যাতিতার দেহ থেকে যে লালারস উদ্ধার করা হয়েছিল, সেই লালারসের DNA পরীক্ষা করা হয়েছিল। এবং সেই রিপোর্টে সঞ্জয় রাইয়ের নাম উঠে আসে।
এ ছাড়াও সঞ্জয় রাইয়ের জামাকাপড় থেকে যে রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছে, সেটা যে নির্যাতিতার, সেই ব্যাপারেও ফরেনসিকের রিপোর্ট তুলে ধরা হয়। আর সেই তথ্যের ভিত্তিতে সিবিআইয়ের তৈরি বিশেষজ্ঞদের টিমও এই ঘটনায় সরাসরি সঞ্জয়কে অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। যার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে আরজি কর কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত সঞ্জয় রাইকে ফাঁসির দাবিতে আর কোনো বাঁধা দিতে চায় না CBI। তবে এদিন সঞ্জয়ের আইনজীবী কোনো রকম পাল্টা দাবি রাখেনি। জানা গিয়েছে আদালতের নির্দেশে আগামীকাল অর্থাৎ ৪ জানুয়ারি অভিযুক্তর আইনজীবী বিচারকের সামনে যুক্তি দিয়ে বক্তব্য বা ‘আর্গুমেন্ট’ পেশ করবেন।