প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বর্তমান সময়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাল এতটাই বেহাল হয়ে পড়েছে যে জল নয় ওষুধ- ই এখন জীবনে বেঁচে থাকার শ্রেষ্ঠ উপদান হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি মাসে কমপক্ষে এখন দেড় থেকে দু’হাজার টাকার ওষুধ কিনতে হয় সাধারণকে। জ্বর, সর্দি কাশি থেকে শুরু করে প্রেসার, সুগার, থাইরয়েড, হার্ট তো আছেই। সঙ্গে রয়েছে আবার ইনসুলিন এবং ইনজেকশনের খোঁচা। তাই এই দামী দামী ওষুধের ভিড়ে কোথায় বেশি ডিসকাউন্ট বা ছাড় মিলবে তা খুঁজতে দোকানে দোকানে ঘুরতে হয়। আর এই আবহে এই সমস্যার বিরাট স্বস্তি দিতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ব্লক এবং গ্রামীণ হাসপাতালেও চালু হবে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান।
ফের ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান খুলতে চলেছে রাজ্যে
সূত্রের খবর, ২০১২ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজ্যের বড় ও জেলা হাসপাতালগুলিতে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান বা ফেয়ার প্রাইস মেডিসিন দোকান চালু করা হয়েছিল। তাতে মধ্যবিত্তদের অনেক উপকার হয়েছিল। কিন্তু গ্রামীণ হাসপাতালে সেই সুযোগ সুবিধা না থাকায় অনেক গরীব মানুষকে ওষুধ কিনতে গিয়ে বড় সমস্যার মুখে পড়তে হয়। তাই তাঁদের কথা চিন্তা করে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি নয়া সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। রাজ্যের ৩৪৭টি ব্লক এবং গ্রামীণ হাসপাতালেও চালু হবে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান। সব মিলিয়ে রাজ্যে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াতে হতে চলেছে ৪৬০টিরও বেশি।
কী বলছেন স্বাস্থ্যসচিব?
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রের খবর, বাংলায় বর্তমানে মেডিক্যাল কলেজ, জেলা, মহকুমা, স্টেট জেনারেল এবং হাতেগোনা একটি-দুটি গ্রামীণ হাসপাতাল মিলিয়ে মোট ১১৭টি ন্যায্যমূল্যের দোকান আছে। যেগুলি কিনা বিভিন্ন বেসরকারি ওষুধের দোকান সেগুলি চালায়। সম্প্রতি ফের টেন্ডার হয়েছে। চুক্তি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১০৫টি দোকানের জন্য নতুন একাধিক সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ১২টি জায়গায় টেন্ডার হওয়া এখনও বাকি আছে। পাশাপাশি গুণমানের সঙ্গে যাতে কোনও আপস না হয়, সেদিকেও নজর রাখছে রাজ্য। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘রাজ্যের সব ব্লক হাসপাতালে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান হবে। শীঘ্রই এ নিয়ে টেন্ডার হবে।’
এদিকে ব্লক এবং গ্রামীণ হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান চালু হলে ওষুধের ওপর অন্তত পক্ষে ৫০ শতাংশ ছাড়ে ওষুধ দেওয়া হবে রোগীদের। সর্বোচ্চ প্রায় ৮৬ শতাংশ ছাড়ে ওষুধ কেনা যাবে। ছাড়ের পরিমাণটা ওঠা নামা করবে ওষুধের ওপরে। ফলে উপকৃত হবেন অনেক সাধারণ মানুষ।