প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাস্তার আনাচে কানাচে এখন বিজ্ঞাপনের ছয়লাপ। চারিদিকে মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে। তবে কখনও-সখনও বিজ্ঞাপন সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে দেয়। আবার কিছু বিজ্ঞাপন গর্জে ওঠে প্রতিবাদে। কিছু বিজ্ঞাপন বলে সমাজ-সচেতনাতার কথা। বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনের দুনিয়ায় এমন নজির বিস্তর। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় বিজ্ঞাপনগুলি ইংলিশ অথবা হিন্দিতে লেখা থাকে। খুব কম বাংলায় লেখা হয়। এবার এই প্রসঙ্গে বড় পদক্ষেপ নিল কলকাতা পুরসভা।
কলকাতা পুরসভার তরফ থেকে নয়া বিজ্ঞপ্তি
সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার সচিবের তরফে বিজ্ঞাপন বা হোর্ডিং দেওয়ার প্রসঙ্গে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং থেকে দোকানের সাইনবোর্ড, সরকারি দফতরের নামের বোর্ড থেকে রাস্তার নামফলক— সবই এ বার থেকে বাধ্যতামূলক ভাবে লিখতে হবে বাংলাতে। নামফলকে বাংলায় লেখা কার্যকর করতে পুরসভার তরফে গত ২৬ নভেম্বরেই লালবাজারকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এবার সেই বিষয়ে প্রচার শুরু করল লালবাজার।
বাংলায় বিজ্ঞাপনের প্রসঙ্গটি গত ২৬ অক্টোবর কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে তুলেছিল ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি বিশ্বরূপ দে। সেবার তিনি প্রস্তাবে জানিয়েছিলেন, বাংলা ভাষা ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি পেয়েছে। তাই পুরসভার অধীনে সরকারি, বেসরকারি স্তরে যাবতীয় সাইনবোর্ডে বাংলা ভাষা থাকা উচিত। এর পাশাপাশি, পুরসভার নথি-সহ সব রকম চিঠিপত্র ও বিজ্ঞপ্তিও বাংলাতেই লেখা প্রয়োজন। অবশেষে সেই প্রস্তাবে সবুজ সঙ্কেত দিল মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
বিজ্ঞাপনের তত্ত্বাবধান করবেন থানার ওসি-রা
ইতিমধ্যেই লালবাজারের তরফে শহরের প্রতিটি থানায় সেই বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে। সমস্ত থানা এলাকার ব্যবসায়ীরা যাতে প্রতিষ্ঠানের নামফলকে অন্যান্য ভাষার পাশাপাশি বাংলাতেও লেখেন, তার তত্ত্বাবধান করবেন থানার ওসি-রা। এই প্রসঙ্গে নাম না উল্লেখ করে পুরসভার এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন বাংলা আমাদের মাতৃভাষা হলেও এখনও শহরের বহু দোকান, রেস্তরাঁর নামফলকে বাংলা লেখা থাকে না। যেটা খুবই লজ্জার বিষয়। তাই এ বার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে এখন থেকে নামফলকে অন্যান্য ভাষা থাকলেও বাংলা অবশ্যই রাখতে হবে।
বাংলায় বিজ্ঞাপন দেওয়া প্রসঙ্গে পুর সচিব স্বপনকুমার কুণ্ডু জানান, ‘‘শহরের দোকান, রেস্তরাঁর নামফলকে বাংলায় লেখা কার্যকর করতে পুরসভার বিজ্ঞাপন, লাইসেন্স দফতর ওই সমস্ত দোকান, রেস্তরাঁ-সহ বিভিন্ন সংস্থার কর্ণধারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও ব্যবসায়ীদের বার্তা দেওয়া হবে।’’