প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত বছরের দুঃখ, কষ্ট ভুলে, আনন্দ ও ভালোবাসার সুন্দর মুহূর্তগুলিকে আগলে রেখে অবশেষে নতুন বছরে পা সকলের। আগমন হল ২০২৫ এর। আর এই নতুন বছরেই একের পর এক নিয়মের বড় বদল আনতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ঠিক তেমনি নতুন বছরের প্রাক্কালে রাজ্যের শিক্ষকদের (Teacher) জন্য এল এক দারুণ সুখবর। রাজ্যের সমস্ত সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং সরকার পোষিত স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বেতন সংক্রান্ত নেওয়া হল এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আর তাতেই বেশ খুশি শিক্ষক মহল।
শিক্ষকদের বেতন সংক্রান্ত এক নয়া বিজ্ঞপ্তি
২০২০ সালে রাজ্য সরকার এক আইনের মাধ্যমে একটি প্রথা চালু করেছিল যে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং সরকার পোষিত স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বেতন ঊর্ধ্বসীমা অতিক্রম হলেও তাঁদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির সুযোগ একদমই বন্ধ থাকবে। তবে সেই নিয়মে এবার পাঁচ বছর পর এক বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। সম্প্রতি রাজ্যের অর্থ দফতর এক নয়া বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। যেখানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে এবার থেকে বেতন ঊর্ধ্বসীমায় পৌঁছে যাওয়ার পরেও তারা বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বা ‘ইনক্রিমেন্ট’ পাবেন। আর অর্থ দপ্তরের অনুমোদন নিয়ে এই নিয়ম সম্পূর্ণ কার্যকর করার বিজ্ঞপ্তি ইতিমধ্যেই প্রকাশ করল শিক্ষা দপ্তর।
বার্ষিক বেতন বৃদ্ধিতে সীমাবদ্ধতা
এছাড়াও অর্থ দফতরের বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে এও জানানো হয়েছে যে, রাজ্যের সরকারি স্কুলের শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে ৬ বারের বেশি বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি করা যাবে না। ইতিমধ্যেই সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এমনকি যাঁরা বেতন ঊর্ধ্বসীমা অতিক্রম করেছেন, তারাও এই নিয়মে অন্তর্ভুক্ত হবেন। কিন্তু একটি বিষয় সমাধান করা হলেও এখনও এমন অনেক বিষয় রয়েছে যা নিয়ে এখনও চলছে বিস্তর আলোচনা।
সাধারণত সরকারি স্কুলের শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বিশেষ বেতন বৃদ্ধি হয় বছরে তিন বার। ৮, ১৬ এবং ২৪ বছরে। সেখানে সরকার পোষিত ও সাহায্যপ্রাপ্তদের কাজ এক হলেও, মাত্র দুটি ক্ষেত্রে বেতন বৃদ্ধি হয়ে থাকে। একটি ১০ বছরের ক্ষেত্রে এবং অপরটি ২০ বছরের ক্ষেত্রে বেতনবৃদ্ধি হয়ে থাকে। তবে শিক্ষকদের সরকারি কর্মীদের মতো সরকারি স্বাস্থ্যবিমা-সহ একাধিক সুযোগ-সুবিধা ছিল না। ফলে দিনের পর দিন তাঁদের মধ্যে সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে পার্থক্যের পাহাড় ক্রমেই বাড়ছে। তাই সেদিকেও রাজ্য সরকারের নজর রাখার আবেদন জানানো হয়েছে শিক্ষক মহলের একাংশের তরফ থেকে।
শিক্ষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের মতামত
এই প্রসঙ্গে শিক্ষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত একদিক থেকে ইতিবাচক হলেও তা পুরোপুরি সন্তোষজনক নয়। শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের জন্য আরও সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি করা হচ্ছে সকলের তরফ থেকে। যাতে সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে পার্থক্যের পাহাড় যেন নিম্নমুখী হয়।