প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: পরীক্ষার ৭০ দিনের মাথায় ফল প্রকাশ হল মাধ্যমিক পরীক্ষার। গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার সকাল ৯ টায় মেধা তালিকা নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে মাধ্যমিক ২০২৫ এ উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ করোনেশন হাই স্কুল প্রথম হয়েছে। এদিকে সেই আনন্দের মাঝেও ফুটে উঠল বিষাদের সুর। আর এর অন্যতম কারণ হল চাকরি দুর্নীতি কাণ্ডে (SSC Case) ঝুলে রয়েছে ওই স্কুলেরই বায়োলজি বিভাগের একমাত্র স্থায়ী শিক্ষিকার চাকরি।
মাধ্যমিকে প্রথম স্থান অধিকার করল এই স্কুল
জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের করোনেশন হাইস্কুলের এক পড়ুয়া উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম হয়েছিলেন। যদিও পরে মাধ্যমিকে একাধিকবার মেধাতালিকায় নাম উঠলেও প্রথম কখনও হয়নি এই স্কুল। প্রথমবার মাধ্যমিকে প্রথম স্থান অর্জন করতে পারেনি এই স্কুলের ছাত্ররা। অবশেষে সেই খরা কাটল। চলতি বছর মাধ্যমিকে প্রথম স্থান অধিকার করল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের করোনেশন হাইস্কুল। পাশাপাশি, আরও এক ছাত্র মাধ্যমিকে দশম হয়েছে। কিন্তু এই খুশির আনন্দের মাঝেই রয়েছে বিষাদের সুর। কারণ এই স্কুলেরই বায়োলজি বিভাগের একমাত্র স্থায়ী শিক্ষিকার চাকরি আটকে গিয়েছে দুর্নীতি মামলায়।
কী বলছেন প্রধান শিক্ষক?
গত ৩ এপ্রিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে একধাক্কায় চাকরিহারা হয়ে যায় প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সম্পূর্ণ বাতিল করা হয় ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল। আর সেই চাকরি বাতিল তালিকায় নাম ওঠে এই স্কুলের একমাত্র বায়োলজির শিক্ষিকার। যেহেতু একমাত্র বায়োলজি শিক্ষিকা, এখনও পর্যন্ত আর কেউ নেই পড়ানোর তাই চাকরি বাতিল হয়ে যাওয়ায় পড়াশোনায় ক্ষতির আশঙ্কাও করছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এই প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক কালীচরণ সাহা বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম একবার হলেও মাধ্যমিকে কখনও আমাদের স্কুল প্রথম হতে পারেনি। এবার প্রথম হওয়া গর্বের, আনন্দের বিষয়। এই ধরনের দিন আগামিদিনেও দেখতে চাই।”
এছাড়াও কালীচরণ বাবু আরও বলেন যে, “এই খুশির দিনেও একটা বেদনার জায়গা অবশ্যই রয়েছে স্কুলে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আমাদের বায়োলজির শিক্ষিকার চাকরি গিয়েছে। বায়োলজির স্থায়ী শিক্ষিক ওই একজনই। যেটা এই মুহূর্তে বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতি। তবে উনি যোগ্যদের তালিকায় রয়েছেন। এটাই সাময়িক স্বস্তি। কিন্তু স্থায়ী স্বস্তি নয়। তিনি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ করে যেতে পারবেন। কিন্তু, তারপর কী হবে?” স্কুলে এখনও পর্যন্ত পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১৮০০ জন পড়ুয়া রয়েছে। এবং স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন ৩৭ ও অস্থায়ী শিক্ষক আরও ৬ জন। সেখানে একজন শিক্ষক কম থাকা মানে অনেকটাই ক্ষতি পড়ুয়াদের কাছে।
আরও পড়ুনঃ মেধা তালিকা দূর, জলপাইগুড়িতে মাধ্যমিক পরীক্ষায় ফেল ৭ হাজারের বেশি পড়ুয়া! তুঙ্গে বিতর্ক
কৃতি পড়ুয়াদের প্রতিক্রিয়া
অন্যদিকে ৬৮৬ নম্বর পেয়ে দশম হয়েছে এই স্কুলের ছাত্র কৌস্তভ সরকার জানিয়েছে সে ভবিষ্যতে মেডিক্যাল নিয়ে পড়াশোনা করতে চায় নিজের স্কুল থেকেই। কারণ বায়োলজি তার প্রিয় বিষয়। এদিকে স্কুলের বায়োলজির শিক্ষিকার চাকরি চলে যাওয়া নিয়ে তার বক্তব্য, “খুবই খারাপ লাগছে। আমাদের খুব ভালবাসেন। যত্ন নিয়ে পড়ান। ওই ম্যাম যেভাবে পড়াতেন, আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। উনি বায়োলজির স্থায়ী শিক্ষিকা ছিলেন।” উল্লেখ্য, এবছরের মাধ্যমিকে প্রথম হয়েছে আদৃত সরকার। সে কৌস্তুভেরই সহপাঠী এবং রায়গঞ্জ করোনেশন হাই স্কুলের কৃতী পড়ুয়া।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |