প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’-এর প্রচার ও বিভিন্ন পরিকাঠামো ও নজরদারি বৃদ্ধি করে রাজ্যে কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে না যাচ্ছে না দুর্ঘটনার সংখ্যা। প্রায় প্রতিদিনই শহরে ছোট-বড় একাধিক দুর্ঘটনা ঘটে। সেগুলি থেকে শিক্ষা নিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হয়। বিশেষত, হেলমেটহীন ও দু’জনের বেশি আরোহী নিয়ে চলা মোটরবাইকের বিরুদ্ধে নিয়মিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হচ্ছে না। আর এই আবহে এবার বড় পদক্ষেপ নিল লালবাজার।
লালবাজার সূত্রের জানা গিয়েছে, গত তিন মাসে শহরে বিভিন্ন জায়গা থেকে মোট ২৬টি পথ দুর্ঘটনার অভিযোগ জমা পড়েছিল। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এই পথ দুর্ঘটনার মধ্যে বেশীরভাগই চালক ভাড়া নেওয়া গাড়ি চালাচ্ছিলেন। আর সেই সমস্ত গাড়ির মালিকদের মধ্যেই অনেকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন, চালক অপটু ছিলেন বা বেপরোয়া ভাবে গাড়ি ছোটাচ্ছিলেন। সেই সময়ে সাবধানে চালাতে বললেও শোনেননি। এমনকি অনেকে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো এবং ক্লান্ত শরীরে ‘ওভারটাইম’ করারও অভিযোগ করেছেন।
চালকদের উপরে নিয়ন্ত্রণ রাখতে হিমশিম ট্রাফিক পুলিশ
সম্প্রতি লালবাজারেরই দেওয়া একটি হিসাব বলছে, শীতের এই সময়ে প্রতিবারই পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ে। মূলত বড়দিন, বর্ষশেষ এবং বর্ষবরণের উৎসব ঘিরে অনেকেই চালক ভাড়ায় নেন। বহু পানশালা এবং রেস্তরাঁও পার্টি-ফেরত লোকজনের জন্য চালক ভাড়ায় নেয়। এই পরিস্থিতিতে এমন চালকদের উপরে নিয়ন্ত্রণ রাখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে বলে লালবাজারের। অন্যদিকে পুরসভার হিসাব অনুযায়ী, শহরে এই মুহূর্তে প্রায় দেড় হাজার এমন নথিভুক্ত সংস্থা রয়েছে, যারা গাড়ির চালক ভাড়ায় দেয়। কিন্তু এমন সংস্থার সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে দাবি পুলিশের।
অ্যাপ-নির্ভর সংস্থার বিরুদ্ধেও উঠে এসেছে অভিযোগ
পাশাপাশি এই সময়ে বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপের ব্যবহার বাড়ে, যেখান থেকে চাইলেই চালক ভাড়ায় পাওয়া যায়। কিন্তু অভিযোগ, শুধুমাত্র লাইসেন্স থাকলেই এমন অ্যাপে চালক হিসাবে নাম নথিভুক্ত করানো যায়। এর ফলে যিনি ভাড়ায় নিচ্ছেন চালক ওই অল্প সময়ের মধ্যে, তাঁর দেখে নেওয়ার উপায় থাকে না যে চালক কেমন গাড়ি চালান। এদিকে অ্যাপ-নির্ভর সংস্থার বিরুদ্ধেও অনেকে অভিযোগ করেন। তাঁদের মতে, ‘‘২৫ এবং ৩১ ডিসেম্বর চাহিদা থাকে সব চেয়ে বেশি। তখন ওভারটাইমও করতে হয়। যেহেতু ৫ জানুয়ারির পরে টাকা মেটানো হয়, তাই ক্লান্তি নিয়েও কাজে যেতে হয়। নয়তো অ্যাপ সংস্থা সমস্ত টাকা আটকে দেয়।’’
বড় পদক্ষেপ লালবাজার পুলিশের
তাই এবার দুর্ঘটনা এড়াতে লালবাজার পুলিশ যে SOP প্রকাশ করতে চলেছে। যে সংস্থা চালক ভাড়ায় দেওয়ার ব্যবসা করবে, তাদের চালকদের সম্পর্কে সমস্ত তথ্য লিখিত আকারে রাখতে হবে। আর সেক্ষেত্রে এর দায়িত্ব নেবে রিজিয়োনাল ট্রান্সপোর্ট অফিসারেরা অর্থাৎ RTO দফতর। তাঁরা এমন সংস্থার নামের তালিকা প্রকাশ করবে, যাতে সেখান থেকেই নিশ্চিত হয়ে চালক ভাড়ায় নিতে পারেন। এবং যে রেস্তরাঁ এবং পানশালা চালক ভাড়ায় নেবে, তাদেরই চালক সম্পর্কে সমস্ত তথ্য জেনে নিতে হবে।
এছাড়াও, বেশি জোর দেওয়া হবে লার্নার্স লাইসেন্স নিয়ে। যাতে এই লাইসেন্স নিয়ে কেউ যাতে গাড়ি না চালান, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে খুনের চেষ্টার মতো ধারাতেও মামলা রুজু করা হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |