প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: চলতি বছর অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে সামনেই আসছে রথযাত্রা। তাই তার আগে রাজ্যের সকল পুণ্যার্থীদের জন্য রাজ্য সরকার এক উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবার রথযাত্রায় বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ (Prasad Of Digha Jagannath Temple)। সেই কারণে প্রতিটি জেলায় এবার স্থানীয় ভাবে প্রসাদের মিষ্টি তৈরি করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে এবার সেই মিষ্টিতে নাকি মেশানো হতে চলেছে দিঘার মন্দিরের মূল প্রসাদ খোয়া।
প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছে যাবে জগন্নাথের প্রসাদ!
বরাবরই ভক্তের কাছে পুজোয় ভগবানের প্রসাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে। যা ভক্তদের আধ্যাত্মিক এবং মানসিক শান্তির বৃদ্ধি করে। আর এই আধ্যাত্মিক তৃপ্তি লাভই অবস্থান করে সমস্ত জাতি ধর্মের ঊর্ধ্বে। ঠিক সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের দিনই ঘোষণা করেছিলেন যে রাজ্যের প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছে যাবে জগন্নাথের প্রসাদ। তবে ঘোষণাতেই থেমে থাকেননি তিনি। জোর কদমে শুরু করে দিয়েছে প্রসাদ বিতরণের প্রস্তুতি।
জানা গিয়েছে আজ অর্থাৎ সোমবার দিঘা জগন্নাথ মন্দিরে প্রভু জগন্নাথের চরণে প্রায় ৩০০ কেজি খোয়া ক্ষীর অর্পণ করা হয়েছিল। রাজভোগের পর এই খোয়া ক্ষীর অর্পণ করা হয়েছিল। এরপর সেই ক্ষীর রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় জেলায় পৌঁছে যাবে। প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রতি জেলায় ১০ কেজি প্রসাদী খোয়া যাবে একটি কার্টন বা বড় বাক্সে। খোয়ার ১০টি মুখবন্ধ প্যাকেট থাকবে তাতে, এক কেজি করে প্রসাদী খোয়া (Prasad Of Digha Jagannath Temple) প্রতিটিতে থাকবে। কিন্তু এই প্রসাদ বিতরণের মধ্যেই এবার প্রশ্ন উঠছে অতিরিক্ত গরমে খাবার পচনের প্রসঙ্গ। তবে সেই নিয়েই এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার।
কোল্ড চেনের মাধ্যমে ক্ষীর সরবরাহ
সূত্রের খবর, জগন্নাথ মন্দির প্রসাদী খোয়া আজ, সোমবার থেকেই জেলায় জেলায় পাঠানো শুরু হচ্ছে ‘কোল্ড চেন’ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে। দ্রুত পচনশীল খাদ্যদ্রব্য কিংবা ওষুধপত্র, টিকা মূলত এই ‘কোল্ড চেন’ ব্যবস্থায় স্থানান্তরিত হয়। সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখতে হয়। এবার এই ব্যবস্থার মাধ্যমে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে প্রসাদী খোয়া পৌঁছবে সড়কপথে, উত্তরবঙ্গে যাবে বিমানে। সবটাই হবে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে। দিঘার জগন্নাথ মন্দির পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ইসকনের কলকাতা শাখার সহ-সভাপতি রাধারমণ দাস বলেন, “রাজ্যের ২৩টি জেলায় পাঠানোর আগে ওই খোয়া জগন্নাথদেবের কাছে পুজো করা হবে।”
উত্তরবঙ্গে কোথায় কোথায় পৌঁছবে?
প্রশাসনিক উদ্যোগে মন্দিরে খোয়ার বাক্স আনা-নেওয়ার গোটা বিষয়টি সমন্বয় করবেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির জন্য সাতটি বাক্স কলকাতা থেকে বিমানে শিলিগুড়ি পৌঁছবে। পরে শিলিগুড়ির মহকুমাশাসকের অফিস চত্বর থেকে প্রসাদী খোয়ার বাক্স নেবেন দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর— এই সাত জেলার প্রতিনিধিরা।
দক্ষিণবঙ্গের কোথায় কোথায় পৌঁছবে?
এবং দক্ষিণবঙ্গে আগামীকাল, মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টের মধ্যে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম— এই ১২টি জেলা কলকাতার রবীন্দ্র সদন চত্বর থেকে প্রসাদী খোয়া সংগ্রহ করবে। এরপর প্রসাদী খোয়া জেলায় পৌঁছোনোর পরে তা মিশিয়ে স্থানীয় মিষ্টির দোকানে তৈরি হবে পেঁড়া এবং গজা। সেই প্রসাদ ও দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের ছবি আগামী ২৭ জুন রথযাত্রার আগেই রেশনের মতো বাড়ি বাড়ি পৌঁছবে।
আরও পড়ুন: দিঘা-পাঁশকুড়া ট্রেনের সময়সীমা বাড়াল রেল, জানুন কতদিন পর্যন্ত চলবে আর
বিরোধীদের মন্তব্য
তবে রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগকে বাঁকা চোখে দেখছেন বিরোধীরা। এই প্রসাদের সঙ্গে নাকি দিঘার মন্দিরের কোনো সম্পর্ক নেই বলে একযোগে দাবি করে আসছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এমনকি রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যও তাঁর সঙ্গে সুর মিলিয়েছিলেন। কিন্তু বিরোধীদের চোখে আঙুল দিয়ে পাল্টা জবাব দিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “এঁরা আদেও হিন্দু? দেশ-বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ আসছেন। ওঁদের সহ্য হচ্ছে না এটা।”
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |