বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গানে রানারের জীবনের বর্ণনা পেয়েছিলেন শ্রোতারা। সেই রানারের মতো না হলেও বেশ ব্যস্ত পুরুলিয়া জেলার কাশীপুরের রামবনি গ্রামের বাসিন্দা পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার নির্মল মাহাতো (Civic Volunteer Nirmal Mahato Story)। এক মুহূর্ত বিশ্রামের জোগাড় নেই তাঁর! প্রতিকূলতা, আর্থিক অনটন, দারিদ্রতা এই প্রতিটি শব্দ তাঁর আত্মার খুব পরিচিত। হ্যাঁ, টালির ছাউনির নিচে বেড়ে ওঠা এবং সেখান থেকেই স্বপ্ন দেখা শুরু হয়েছিল নির্মলের। হাজার কঠিন পরিস্থিতি সত্ত্বেও মনকে বুঝিয়ে লড়ে গিয়েছিলেন তিনি। আজ পুরুলিয়ার সেই নির্মল বাংলার ক্রীড়া জগতের এক উজ্জ্বল তারা। দৌড়কে সঙ্গী করেই ম্যারাথনে অংশ নিয়েছিলেন পুরুলিয়ার সিভিক। সেখান থেকেই জেলা জেলা থেকে রাজ্য থেকে দেশ অর্থাৎ জাতীয় স্তরে পর্যন্ত ছড়িয়ে দিয়েছেন নিজের প্রতিভা।
নির্মাণের সাফল্যে উজ্জ্বল হয়েছে বাংলার নাম
কিছুদিন আগেই দার্জিলিংয়ের কালিংপং জেলায় পুলিশের তরফে আয়োজিত ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন পুরুলিয়ার নির্মল। সেখানে নিজের একাগ্রতা এবং জেদকে সঙ্গী করেই দৌড়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন বাংলার সিভিক ভলান্টিয়ার। শুধু তাই নয়, এর আগে রাজ্য তথা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে কখনও রূপো, কখনও সোনা জিতে এনেছেন তিনি।
পাড়া-প্রতিবেশীরা বলেন, ‘নিজের কাজের পাশাপাশি দৌড়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলতার নেপথ্যে রয়েছে শুধুমাত্র নির্মলের অদম্য চেষ্টা, সাহস এবং অধ্যাবসায়।’ না বললেই নয়, নির্মলের কাছে কোনও প্রতিযোগিতাই কঠিন নয়। তাঁর বক্তব্য, ‘ভালবাসার জায়গায় কিছুই অচেনা নয়। পরিশ্রম করলে সাফল্য আসবেই।’ জানা গিয়েছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ম্যারাথনে অংশ নিয়ে একাধিক মেডেল ঘরে তুলেছিলেন নির্মল বাবু। পেশায় একজন সিভিক হয়ে বিভিন্ন ম্যারাথনে অংশ নিতে পারায়, নিজের উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাদের ধন্যবাদ জানান তিনি। নির্মল ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, থানার উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা নির্মলের স্বপ্ন পূরণের জন্য সহযোগিতা করেন। তাই তিনি আজ এখানে.. সে কথা স্বীকার করেন পুরুলিয়ার রানারও। সবমিলিয়ে, পুরুলিয়ার পাশাপাশি নিজের কাজের মধ্যে দিয়ে গোটা বাংলার নাম বারবার উজ্জ্বল করে চলেছেন তিনি।
অবশ্যই পড়ুন: ১০ হাজার কোটির বিনিয়োগে হাওড়ায় শিল্প বিপ্লব, মিলবে ৫২ হাজার চাকরি
উল্লেখ্য, শহর কলকাতার এক ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করে অসাধারণ পারফরমেন্স দেখিয়েছিলেন পুরুলিয়ার নির্মল। এজন্য অবশ্য ক্রিকেটের ভগবান কিংবদন্তি সচিন তেন্ডুলকরের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করার সৌভাগ্য হয়েছিল বাংলার সিভিক ভলান্টিয়ারের। সেই উজ্জ্বল মুহূর্তকে আজও নিজের জীবনের অনুপ্রেরণা করে এগিয়ে চলেছেন নির্মল মাহাতো।












