প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: শুধু প্রশ্নপত্রেই নয়, এখন থেকে জালিয়াতি রুখতে উচ্চ মাধ্যমিকের বইয়ে ব্যবহার করা হতে চলেছে কিউআর কোড (QR Code)। প্রতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হতেই কলেজ স্ট্রিট চত্বরে ছেয়ে যায় একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির বই। সেখানে সরকারের থেকে দেওয়া বিনামূল্যের বইগুলিও চড়া দামে কিনতে হয় পড়ুয়াদের। আর এবার সেই সমস্যা দূর করতে কড়া পদক্ষেপ নিল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ সংসদের
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, উচ্চমাধ্যমিক স্তরে অর্থাৎ একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা A, বাংলা B, ইংরেজি A, ইংরেজি B, ঊর্দু, হিন্দি A, হিন্দি B, নেপালি A, নেপালি B, সাঁওতালি, ওড়িয়া এবং স্বাস্থ্য ও শারীরশিক্ষা (বাংলা ও ইংরেজি সংস্করণ) পাঠ্যপুস্তকগুলি সরকারি, সরকার-পোষিত ও সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা বিনামূল্যে পাবে।
QR কোডের ব্যবহার বইতে!
এমনকি উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে ছাত্র ছাত্রীদের উদ্দেশে এও স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে, অন্যান্য জায়গা থেকে যেন এই পাঠ্যপুস্তকগুলি যাতে তারা না-কেনে। কারণ, কোনও ভাষার বইয়ের পিছনের মলাটে যদি সঠিক QR কোড না-থাকে, তবে সেই বই পর্ষদের অনুমোদিত নয় বলে গণ্য হবে।
এদিকে দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে জুনের প্রথম সপ্তাহে স্কুলে স্কুলে সরকারি বই পৌঁছোয়। তার আগে অনলাইনে ডাউনলোড করা PDF-ই পড়তে হত পড়ুয়াদের। তবে এবার সেই সমস্যা আপাতত খানিকটা দূর হল।
কী বলছেন সংসদের সভাপতি?
এদিন এই প্রসঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান যে, “অনেক সময় সরকারি বই বেআইনিভাবে কলেজ স্ট্রিটে বিক্রি হয়। এমনকি সরকারি বইয়ের এদিক-ওদিক করেও সেই বই বিক্রি করা হয়। যাতে সেটা আর কেউ করতে না-পারে এবং জাল বই রুখতেই QR কোডের ব্যবহার করা হচ্ছে।
আসলে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই বিষয়ে চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য আরও জানিয়েছেন যে, ওই QR কোড নকল করা সম্ভব নয়। তাতে উন্নত মানের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মাত্র ৩৩৩ টাকা করে জমিয়ে ১৭ লক্ষ টাকা! বাঁচার আলো দেখাচ্ছে পোস্ট অফিসের এই স্কিম
এছাড়াও বইতে QR কোড ব্যবহারের প্রসঙ্গ টেনে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সচিব প্রিয়দর্শিনী মল্লিক বলেন, ‘‘আমাদের কাছে বেশ কিছু জেলা থেকে অভিযোগ আসছিল সরকারি বই জাল করা হচ্ছে বলে। এর ফলে পড়ুয়াদের মধ্যেও বিভ্রান্তি দেখা দিতে পারে। তার জন্য আমরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ তবে এই বিষয়ে সরকারের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ যে বুঝতে পেরেছে যে কাউন্সিলের বই নকল করে কোনও একটা মহল বিক্রি করছে। তা হলে তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না?’’ যদিও এই প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো সঠিক উত্তর পাওয়া যায়নি।