শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ যেমন কথা তেমন কাজ। শীতের মৌসুমে একদিকে যখন উত্তরবঙ্গের উদ্দেশ্যে বেশিরভাগ মানুষ রওনা দিচ্ছেন তখন আচমকাই বড়সড় ঘটনা ঘটে গেল। থমকে গেল একের পর এক ট্রেনের চাকা ব্যাপক সমস্যার মুখে পড়তে হলো সাধারণ রেল যাত্রীকে। এখন নিশ্চয় ভাবছেন কী হয়েছে? তালে জানিয়ে রাখি, গ্রেটার কোচবিহারের দাবিতে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে হলো উত্তরবঙ্গের এই জেলাটি।
উত্তপ্ত কোচবিহার
বড়সড় আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলো গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অর্গানাইজেশন (জিসিপিও)। প্রায় আট বছর পর ‘রেল রোকো’ আন্দোলন করবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল সংস্থাটি। ফলে যেমন কথা তেমন কাজ। এক ১১ ডিসেম্বর তুফানগঞ্জ জোরাই রেলওয়ে স্টেশনে দুটি মূল দাবি নিয়ে এই প্রতিবাদ হচ্ছে সকাল থেকে। ভারত সংযুক্তি চুক্তির অধীনে ১৯৪৯ সালের পৃথক রাজ্যের দাবির পূরণ এবং ভারতীয় সংবিধানের অষ্টম তফসিলভুক্ত ভাষা হিসাবে রাজবংশী ভাষাকে স্বীকৃতি, এই দুই দাবীকে ঘিরে চলছে আন্দোলন।
সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, তাদের দাবি সম্পর্কে ভারত সরকার যতক্ষণ না কোনও সিদ্ধান্ত জানাচ্ছে ততক্ষণ এই রেল অবরোধ চলবে। এদিকে এহেন আন্দোলনের জেরে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে একের পর এক ট্রেন। আপনিও কি আগামী দিনে বিশেষ করে উত্তরবঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন? তাহলে জেনে রাখুন আজ এবং আগামী কয়েক দিন কোন কোন ট্রেন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে রেলের তরফে।
বাতিল বহু ট্রেন
বুধবার সকাল থেকে উত্তর পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাংলার রেল যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন। বাতিল করা হয়েছে এনজিপি-গুয়াহাটি বন্দে ভারত আপ-ডাউন-সহ দুরপাল্লার কয়েকটি ট্রেন। রাজধানী এক্সপ্রেস-সহ কয়েকটি ট্রেনের রুট পরিবর্তন করা হয়েছে। অন্যদিকে ঘন কুয়াশার কারণে আগে থেকেই কয়েকটি ট্রেন বাতিল করার কথা আগেই জানিয়েছিল রেল। সবমিলিয়ে অবরোধের জেরে বিপর্যস্ত উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাংলার রেল যোগাযোগ।
জিসিপিও নেতা বংশী বদন বর্মন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন। কোচবিহারের পাশাপাশি জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি-সহ অন্যান্য জেলা থেকেও এই কর্মসূচি সফল হবে বলে আশাবাদী তিনি। তবে এটাই প্রথম নয়। এর আগে জিসিপিওর সর্বশেষ উল্লেখযোগ্য ‘রেল রোকো’ আন্দোলনটি ২০১৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি হয়েছিল, যা কিন্তু ৮৪ ঘন্টা স্থায়ী হয়েছিল এবং দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এরপর থেকে রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতির পরিবর্তনের কারণে সংগঠনটি এ ধরনের অনুষ্ঠান করা থেকে বিরত থাকে বলে জানা গেছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, বংশী বদন বর্মন বর্তমানে রাজ্য সরকারের বেশ কয়েকটি পদে রয়েছেন, যা আসন্ন আন্দোলনের গতিপথকে প্রভাবিত করতে পারে। কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “বংশীবদন বর্মনের আলাদা সংগঠন রয়েছে।”