কাকদ্বীপে মৎস্যজীবী সেজে মাঝসমুদ্রে পাড়ি, পুলিশের জালে ২০ রাজ্যে পালানো কুখ্যাত আসামি

Published on:

Kakdwip

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: টানা এক বছর ধরে পুলিশকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাচ্ছে নারী ও শিশু পাচারের সঙ্গে যুক্ত এক আসামি! তাই এবার একই এলাকায় নয়, দেশের প্রায় কুড়ি রাজ্যে দৌড় করিয়ে ছেড়েছে এই আসামি। তবে ধোপে টিকলো না সেই পরিকল্পনা। শেষমেশ পুলিশের স্ট্র্যাটেজিতেই হল কিস্তিমাত। মৎস্যজীবীর ছদ্মবেশে একেবারে ফিল্মি কায়দায় কাকদ্বীপ (Kakdwip) নামখানার মাঝসমুদ্রে অভিযান চালিয়ে পাকড়াও করা হয়েছে তাঁকে।

ঘটনাটি কী?

রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে অক্টোবর মাসে রানাঘাট জেলার হরিণঘাটা থানা এলাকায় এক নাবালিকা নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের হয়। নাবালিকার সন্ধানে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চলে। মেলেনি তাঁর খোঁজ। এদিকে এই তল্লাশিতেই উঠে এসেছিল শিশু ও নারী পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত এক জনের নাম। শেষে চলতি বছর জুলাইয়ে কল্যাণী থেকে নিখোঁজ নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়। চিকিৎসা করার পর ডাক্তারি রিপোর্টে উঠে আসে যে সেই মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা। তাই এই মামলায় অপহরণের সঙ্গে পকসো আইন যুক্ত করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এরপরেই অপরাধীকে ধরার জন্য নজর রেখেছিল পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ (এসওজি) ও বিশেষ তদন্তকারী দল।

অভিযুক্তকে ফাঁদে ফেলার জন্য বিরাট প্ল্যান!

পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তের মোবাইলে টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে দেখা যায় অভিযুক্ত বারবার অবস্থান বদলে ফেলছেন। কিন্তু গত এক মাস ধরে খবর পাওয়া যাচ্ছে যে ওই অভিযুক্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ও কাকদ্বীপ এলাকার মধ্যেই ঘোরাফেরা করছিলেন। এবং, মাঝসমুদ্রে মৎস্যজীবীদের একটি নৌকায় আত্মগোপন করে আছেন তিনি। শেষমেশ এসওজি এবং পুলিশের তদন্তকারী বিশেষ দল স্থানীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করে ছক কষে অভিযুক্তকে ফাঁদে ফেলার। এরপর রীতিমত ফিল্মি কায়দায় গ্রেফতারি এড়াতে এবং সঠিকভাবে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে ‘সমুদ্র অভিযানে’ নামে রানাঘাট জেলা পুলিশ।

মৎস্যজীবী সেজে ধাপ্পা অভিযুক্তকে!

অভিযুক্তকে ধরতে গোটা সমুদ্র অভিযানে রানাঘাট পুলিশ জেলার দু’জন সাব ইনস্পেক্টর এবং দু’জন কনস্টেবল ছিলেন। তবে পুলিশি বেশে নয় রীতিমত স্থানীয় মৎস্যজীবী সেজে সমুদ্রের ১০ কিমিরও বেশি গভীরে একটি নৌকার কাছে পৌঁছে যান। পরিকল্পনাটি এমন ভাবে রূপায়িত করা হয়েছিল যে বিপদের আজ কোনভাবেই টের পাননি ওই অভিযুক্ত। ফলে কোন কিছুর জন্য প্রস্তুত ছিলেন না আসামি। শেষে মাঝসমুদ্রে পুলিশের জালে ধরা পড়েন পকসো মামলার আসামি। গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার, রাতে পুলিশের স্ট্র্যাটেজির জালে ধরা পড়লেন শিশু যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত সেই ব্যক্তি।

আরও পড়ুন: স্করপিও করে গরু পাচার রায়গঞ্জে! পুলিশের জালে ২

এদিকে পুলিশের এই বুদ্ধিমত্তা ও দক্ষতার প্রশংসা জানিয়েছেন রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার আশিসকুমার মৌর্য। তিনি বলেন, ‘‘গত এক বছর থেকে এই আসামি পলাতক ছিলেন। মাঝসমুদ্রে অভিযান চালিয়ে আসামিকে গ্রেফতার অন্যতম সাফল্য। আশঙ্কা করা হচ্ছে অভিযুক্ত নারী ও শিশু পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন। এই অভিযানের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকেই দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।” জানা গিয়েছে আজ অর্থাৎ শনিবারই আদালতে নিয়ে আসা হয়েছে অভিযুক্তকে।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥