বাংলায় বন্ধ বিশ্বের সবথেকে বড় দুর্গা প্রতিমার কাজ, প্রশাসনের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে উদ্যোক্তারা

Published on:

world largest durga idol

শ্বেতা মিত্রঃ একদম দোরগোড়ায় এসে কড়া নাড়ছে বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব দুর্গাপুজো। আসন্ন এই উৎসবকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই সকলের প্রস্তুতি তুঙ্গে রয়েছে। শহর থেকে জেলা সর্বত্রই চলছে প্যান্ডেল বাঁধার কাজ। আবার বহু জায়গায় কাজও শেষ হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে প্রতিমা তৈরির কাজও একদম শেষের দিকে। ফলে এখন আকাশে বাতাসে রয়েছে পুজোর মন মাতানো গন্ধ। কিন্তু এই দুর্গাপুজোর আগে বেজায় মন খারাপ হয়ে গেল পুজোপ্রেমীদের। এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন যে হঠাৎ কি হল? তাহলে জানিয়ে রাখি বন্ধ হওয়ার মুখে বিশ্বের সবথেকে বড় দুর্গাপ্রতিমা ! হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন।

WhatsApp Community Join Now

দুর্গাপূজার আর মাত্র ২০ দিনও হয়তো বাকি নেই, তার মধ্যেই বিশ্বের সবথেকে বড় দুর্গাপ্রতিমা বন্ধ করে দিল প্রশাসন। আর এই নিয়ে বেজায় মন খারাপ সাধারণ মানুষের। আরো বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই লেখাটির উপর।

বিশ্বের সবথেকে বড় দুর্গাপ্রতিমা বন্ধ করল প্রশাসন!

এমনিতেই বছরে পর বছর ধরে এমন বহু দূর্গা পুজো ক্লাব রয়েছে যারা কিনা থিম নির্ভর পুজো করে আসছেন। তো আবার এমনও কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে পুরোনো সেই ঐতিহ্য বজায় রেখে পুজো করা হচ্ছে। তবে চলতি বছরের প্রশাসনের কোপ পড়ল রাণাঘাটের অভিযান সংঘের দুর্গা প্রতিমার ওপর। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। এই বছর তাঁদের লক্ষ্য হল বিশ্বের সবথেকে বড় দুর্গাপুজো করা। তবে শেষ মুহূর্তে সেই কাজ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বন্ধ করে দেওয়া হল।

জানা গিয়েছে, বিগত দুদিন ধরে সেই প্রতিমা তৈরির কাজ বন্ধ রয়েছে। বাংলার বহু মানুষ আশা করেছিলেন যে ২০২৪ সালে এই রানাঘাটের বুকে বিশ্বের সবথেকে বড় দুর্গা প্রতিমা দেখার ঐতিহাসিক সাক্ষী থাকতে চলেছিলেন তারা। কিন্তু সেই আশা আদৌ আর তাদের পূরণ হবে কিনা সেই নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

কী বলছে পুজো ক্লাব?

ক্লাবের তরফে অপূর্ব রায় জানান, প্রতিমা তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেইসঙ্গে কাঠামো একদম রেডি ছিল। কিন্তু আচমকা পুলিশের তরফে এসে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কেন এই কাজ বন্ধ করতে হবে সেই নিয়ে সদুত্তর দিতে পারেনি পুলিশ প্রশাসন। বলছে নাকি ওপর থেকে চাপ আছে। কিন্তু কি চাপ আছে সেটা বলছে না। হাই কোর্টে একটি পিটিশনও দায়ের করা হয়েছে। এখন দেখা যাক কী বলে আদালত। এই কাজের জন্য বেশ খানিকতা কাজও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে যদি কাজ বন্ধ হয়ে যায় তাহলে তো খুব খারাপ হবে বিষয়টা।’

ক্লাবের তরফে জানানো হয়েছে, ‘সোদপুরে ১০০ ফুট, কল্যাণীতে ১৭০ ফুটের দুর্গাপ্রতিমা তৈরী হচ্ছে। অথচ আমাদেরটা মাত্র ১২০ বা তার একটু বেশি ফুটের ঠাকুর তৈরী হচ্ছিলো। বিগত ৬ মাস ধরে এই কাজ হচ্ছিল। কিন্তু আচমকাই প্রশাসনের তরফে সেই কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের তরফে আমাদের একটাই আর্জি, আমাদের কাজটা যেন করতে দেওয়া হয়। কাজটা না হলে সবার খুব সমস্যা হবে। পুজোকে কেন্দ্র করে কারিগর, শিল্পীদের সকলের আশা আকাঙ্খা জড়িয়ে থাকে। এখানে কিন্তু কারো স্পনসর নেই। সবটাই গ্রামবাসীদের টাকা থেকেই হচ্ছে। পুজোর জন্য গ্রামবাসী জমিও দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু ধরুন পুজোটা হল না, তাহলে সকলের কষ্ট।’ মৃৎশিল্পী জানাচ্ছেন, ‘এ বছর আমাদের গ্রামের হাত ধরে বিশ্বের সবথেকে দুর্গা প্রতিমা দেখার সুযোগ পেতে চলেছিলেন সকলে কিন্তু আচমকা প্রশাসনের সিদ্ধান্তে সবকিছুই মাটি হয়ে গেল। এই দুর্গাপুজোটিকে ঘিরে আমাদের সকলের একটা আবেগ ছিল। সারা বিশ্বের লোক যাতে আমাদের ঠাকুর দেখতে পায় সেটাই লক্ষ্য ছিল। গিনেস বুকেও আবেদন করা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এই মুহূর্তে এসে কাজটাই বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। ফলে আমাদের সকলেরই মন খারাপ। মুখ্যমন্ত্রী দিদিকে বলব আমাদের এই কাজটা যাতে সুষ্ঠুভাবে হোক সেটার একটা ব্যবস্থা করে দিতে। পুজোটা করতে দেওয়া হোক।’

সঙ্গে থাকুন ➥
X