সঞ্জয় রায়ের ভাগ্নি মৃত্যু মামলায় সৎমা ও বাবাকে বেধড়ক মারধর! উঠল গুরুতর অভিযোগ

Published:

Alipore
Follow

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: আরজি করে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের ভাগ্নিকে খুন করা হয়েছে! আর সেই খুনের অভিযোগে মৃত স্কুলছাত্রীর বাবা-মাকে পুলিশের সামনেই মারধর করলেন স্থানীয়েরা। ব্যাপক শোরগোল কলকাতার আলিপুরে (Alipore)। তাঁদের দাবি, মায়ের মৃত্যুর পরে তার বাবা আবার বিয়ে করেন। পরে সৎমা এবং বাবা দুজনে মিলে মেয়েটিকে অত্যাচার করে মেরে ফেলেছেন। এমনকি কিশোরীর খুনের অভিযোগও করছেন মৃতার ঠাকুরমাও।

ঠিক কী ঘটেছে?

গতকাল অর্থাৎ সোমবার রাতে আলিপুর থানার বিদ্যাসাগর কলোনি এলাকায় একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বছর দশেকের নাবালিকার দেহ। পরে জানা যায় ওই কিশোরী আসলে আরজি করের ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী সঞ্জয় রায়ের ভাগ্নি। মেয়েটির সৎ মা দাবি করেন যে, তিনি বাজারে গিয়েছিলেন। বাড়িতে একাই ছিল মেয়ে। বাড়ি ফিরে মেয়েকে কোথাও দেখতে পাননি। পরে ঘরের একটি আলমারি খুলতেই চমকে যান তিনি। দেখেন, আলমারির ভিতরে মেয়ের ঝুলন্ত দেহ। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে কিশোরীর মৃত্যু শুধুই আত্মহত্যা না কি খুন এ নিয়ে এখনো কিছু স্পষ্ট জানায়নি পুলিশ।

ক্ষুব্ধ প্রতিবেশী

এদিকে পঞ্চম শ্রেণীর কিশোরীর এই রহস্যমৃত্যুকে ঘিরে তোলপাড় কাণ্ড এলাকায়। কিশোরীর ঠাকুমা জানিয়েছেন, এক মাস আগে যাঁর ১১ বছর বয়স হল, সে কি করে গলায় দড়ি দিতে পারে? এটা কি সম্ভব? পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে মৃতা কিশোরীর বাবার প্রথম স্ত্রী অর্থাৎ কিশোরীর মাও আত্মঘাতী হয়েছিলেন। তারপর কিশোরীর মাসিকে বিয়ে করেন তিনি।

এদিকে মাসি সৎমা হয়ে এসে মেয়েটির উপর নির্যাতন করতেন বলে দাবি করেন প্রতিবেশীরা। তাঁদের কথায়, ‘‘যখন তখন মেয়েটিকে মারধর করা হত। ওকে কান্নাকাটি করতে শোনা যেত। বাবা এবং সৎমা, দু’জনেই নাবালিকাকে মারধর করতেন।’’ তাঁদের দৃঢ় বিশ্বাস পঞ্চম শ্রেণীর ওই কিশোরীকে বাবা ও সৎ মা-ই খুন করেছে। এবং ঘটনার প্রতিবাদ করতে কিশোরীর বাবা এবং সৎ মাকে রীতিমত মারধরও করে প্রতিবেশীরা।

প্রতিবেশীদের আক্রমণের মুখে কিশোরীর বাবা মা

রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার মৃতা কিশোরীর বাড়িতে যায় পুলিশ। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবা-মাকে ডেকে পাঠানো হয়। ঠিক তখনই এলাকাবাসী তাঁদের ঘিরে ধরেন। দম্পতিকে উদোম মারধর করা হয়। চুলের মুঠি ধরে কিশোরীর সৎ মাকে মারা হয়, বাদ যায়নি বাবাও। সকলের দাবি, নাবালিকা মেয়েকে নিজেদের স্বার্থে খুন করেছেন দম্পতি। প্রতিবেশীদের আক্রমণের মুখে পড়ে কেঁদে ফেলেন মৃতার সৎ মা। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলতে থাকেন, ‘‘আমার মেয়েকে আমি মারিনি… ওকে আমি খুন করিনি।’’ মেয়েটির বাবাও বলেন, ‘‘আমার আর কিছু বলার নেই। মেয়ে চলে গিয়েছে। আমিও মরে যেতে চাই।’’

আরও পড়ুন: দীপাবলিতে দেশে সবচেয়ে কম দূষণ কলকাতায়! শব্দবাজির দৌরাত্ম্যের মাঝে জানালেন নগরপাল

পঞ্চম শ্রেণীর এই বাচ্চা মেয়েটির উপর দিনের পর দিন এইরূপ অত্যাচারের প্রতিবাদে স্থানীয়রা দম্পতির ফাঁসি চেয়েছে। শেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে কোনো রকমে প্রতিবেশীদের জনরোষের হাত থেকে রক্ষা করে পুলিশ এবং সদ্য কন্যাহারা দম্পতিকে থানায় নিয়ে চলে যায়। এদিকে মৃতা কিশোরীর ঠাকুরমারও দাবি, নাতনি আত্মহত্যা করেনি। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। তবে ছেলে নয় এই কাজে বৌমার দিকে আঙুল তুলেছেন তিনি।

গুরুত্বপূর্ণ
Join
চাকরির খবর
Join
রাশিফল
Join
খেলার খবর
Join