প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত বছর এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি (SSC Recruitment Scam) মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট যেই রায় দিয়েছিল গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট সেই একই রায় বহাল রাখে। ২০১৬ সালের গোটা প্যানেলই বাতিল করে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের চাকরি কেড়ে নিয়েছে শীর্ষ আদালত। এর পর গত ৭ এপ্রিল রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা পুনর্বহাল রাখতে অযোগ্যদের বাদে বাকিদের চাকরিতে ফেরত আনার জন্য আদালতে আবেদন করে পর্ষদ। নতুন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত, চলতি শিক্ষাবর্ষে, যাঁরা এখনও পর্যন্ত যোগ্য এবং অযোগ্য বিভাজনের মধ্যে পড়েনি সেই সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাকে কাজ চালিয়ে যেতে দেওয়ায় অনুমতি চাওয়া হয়। আর সেই রায়ে বিরাট সাফল্য পেল পর্ষদ।
কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন শিক্ষকরা!
সূত্রের খবর, আজ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চে পর্ষদের মামলার শুনানি শুরু হলে SSC, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, রাজ্য সরকার অনুরোধ করে যে, আদালতের নির্দেশ তারা মানছে। কিন্তু তিন মাসের যে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, তা বাড়িয়ে অন্তত ডিসেম্বর করা হোক। এর পর পড়ুয়াদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, এখনও পর্যন্ত যে সমস্ত শিক্ষক অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়নি, তাঁরা নবম-দশম-একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াতে পারবেন। এবং এর সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সেই সমস্ত শিক্ষক পড়াতে পারবেন। অন্যদিকে আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রাজ্য এবং পর্ষদকে বিশেষ কয়েকটি নিদের্শ প্রদান করেছে।
বিশেষ নির্দেশ রাজ্য এবং পর্ষদকে
জানা গিয়েছে আদালতে শুনানি চলার সময় প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমার পর্ষদ এবং রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে যে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এবং ডিসেম্বরের মধ্যে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। মাঝখানে ৩১ মে-র মধ্যে নিয়োগের বিজ্ঞাপন দিতে হবে। এছাড়াও এই নির্দেশের পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি এও জানায় যে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিজ্ঞাপন দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু না হয়, তাহলে রাজ্য সরকার-পর্ষদ প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হতে পারে আর্থিক জরিমানা।
আরও পড়ুনঃ প্রাথমিক মামলায় জামিনের আবেদন খারিজ! তীরে এসে তরী ডুবল পার্থর
এছাড়াও এদিন এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরীক্ষার দিনক্ষণ, পরীক্ষা পদ্ধতি, অ্যাডমিট কার্ড সমস্ত কিছু বিস্তারিত জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবং আদালতের তরফে বলা হয়েছে মোট চারটি বিজ্ঞাপন দিতে হবে, নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ, গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি-র জন্য আলাদা আলাদা বিজ্ঞাপন। পাশাপাশি যোগ্য বলে চিহ্নিত নন যে শিক্ষক-শিক্ষিকারা, তাঁরা কাজ চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি, পরীক্ষায় বসতে পারবেন। কৃতকার্য হলে চাকরিতে যোগ দিতে পারবেন আগামী বছর। কিন্তু এখনও মামলার শুনানির সময়, যোগ্য-অযোগ্যদের লিস্ট দিতে পারেনি এসএসসি। এবার দেখার পালা রাজ্য এবং এসএসসি কতটা আদালতের নির্দেশ পালনে সক্ষম হয়।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।