প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত ৩ এপ্রিল হাইকোর্টের নির্দেশকে বহাল রেখেই এসএসসি (SSC)-র ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। আর এই প্যানেল বাতিলের কারণেই চাকরি চলে গিয়েছিল ২৫,৭৩৫ জনের। সেক্ষেত্রে শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়েছিল কমিশনকে ফের নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। তবে যাঁরা ‘দাগি’ বা ‘অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত’, তাঁরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আর যোগ দিতে পারবেন না। উল্টে তাঁদের বেতনও ফেরত দিতে হবে।
আদালতে ধাক্কা খেল অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা
এদিকে শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশে চোখে অন্ধকার দেখছিল অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত চাকরিপ্রার্থীরা। তাই আরও একবার তাঁদের সুযোগ দিতে অর্থাৎ নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে এবং এপ্রিল মাসে অযোগ্যদের বেতন দেওয়ার আবেদন করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়েছিল ‘অযোগ্য’ চাকরিহারাদের তরফে। কিন্তু সেই মামলা থেকে মুখ ফেরাল সুপ্রিম কোর্ট। জানা গিয়েছে আজ, শুক্রবার ‘অযোগ্য’ চাকরিহারাদের এই জোড়া মামলা সম্পূর্ণ নাকচ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ সুপ্রিম কোর্টে অযোগ্য চাকরি হারাদের মামলার শুনানির সময় চাকরিহারাদের জীবন-জীবিকার প্রসঙ্গ টেনে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবী মুকুল রোহতগি। আসলে কিছুদিন আগে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার কথা ভেবে সুপ্রিমকোর্ট অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত নয় এমন শিক্ষক এবং শিক্ষিকাদের আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুনরায় কাজে বহাল হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। তাই সেই নির্দেশের ভিত্তিতে অযোগ্য এই সুবিধা প্রদান করার জন্য ছাওয়াল করেছিলেন আইনজীবী মুকুল রোহতগি।
জোড়া আবেদন খারিজ করল আদালত
কিন্তু সেই আর্জি সম্পূর্ণ খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল “আমরা যোগ্যদের শিক্ষকতা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সুযোগ দিয়েছি। আপনাদের জন্য সুযোগ নয়।” এছাড়াও এদিন সওয়াল-জবাবের সময় বিচারপতিরা বলেন, “মামলার শুনানির সময় আপনারাও হাজির ছিলেন। নিজেদের অযোগ্য নয় বলে সওয়াল করেছিলেন। যারা সংশয়ে ভুগতে চান, তারা নতুন নতুন পথে সংশয়ে ভুগবেন। তাদের আবেদনে সাড়া দেওয়ার কোনও কারণ নেই।” আর এই নির্দেশের মাধ্যমে সকলের কাছে এটাই স্পষ্ট হয়েছে যে অযোগ্যদের কাছে নিজেদের প্রমাণ করার আর কোনো সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: আর বিকাশ ভবন নয়! চাকরিহারাদের সেন্ট্রাল পার্কের সামনে বসতে বলল হাইকোর্ট! রাজ্যকেও নির্দেশ
এর আগে, আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে এসএসসি ২০১৬ মামলায় যাঁরা ‘র্যাঙ্ক জাম্প’ করে বা মেধাতালিকার ক্রম অনুযায়ী পিছিয়ে থাকার পরেও অন্যদের টপকে চাকরি পেয়েছিলেন, আগের দিন তাঁদের আবেদনও খারিজ করে দিয়েছিল বিচারপতি কুমারের বেঞ্চ। আদালত সে দিনও জানিয়েছিল, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি খন্না যে নির্দেশ দিয়েছেন, তাতে কোনও ভুল নেই। ‘র্যাঙ্ক জাম্প’ করে চাকরি পেলে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যোগ দেওয়া যাবে না। আর এবার সেই একই নির্দেশ বহাল রাখা হল নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশের ‘অযোগ্য’দের ক্ষেত্রেও।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।