প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত শনিবারের পর আজ অর্থাৎ সোমবার আরজি কর (RG Kar Case) কাণ্ডে দোষী সিভিক ভলান্টিয়ার এর সঞ্জয় রায়ের সাজা ঘোষণা করার কথা। সেই অনুযায়ী সকাল থেকেই তৈরি হয়েছে এক উত্তেজনামূলক পরিস্থিতি। তাই কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় শিয়ালদা আদালত চত্বর। কোনও ভাবেই যাতে বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয়, সে দিকে কড়া নজর পুলিশের।সময় অনুযায়ী দুপুর সাড়ে ১২টার কিছু পর থেকেই সেই মামলার শুনানি শুরু হয়।
বিচারের সময় বাড়ানো হয়েছে!
কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিচারপতি অনির্বাণ দাস সঞ্জয়ের সাজা ঘোষণা করলেন না। আরও সময়ের প্রয়োজন বললেন খোদ বিচারপতি। জানা গিয়েছে দুপুর পৌনে ৩টেয় সাজা ঘোষণা করতে পারেন তিনি। আগের দিনই আদালত জানিয়ে দিয়েছিল যে, সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে যে সব ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে, তার সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি অথবা যাবজ্জীবন। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই শিয়ালদহ কোর্টের বিচারক জানাবেন, কী শাস্তি পেতে চলেছে সে।
গত শনিবার, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪, ৬৬ ও ১০৩ (১) ধারায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। ৬৪ ধারায় (ধর্ষণ), ৬৬ ধারায় (ধর্ষণ, খুন), ১০৩ (১) (খুন)-এ দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তাকে। ওইদিন শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস সঞ্জয়কে সরাসরি দোষী সাব্যস্ত করে বলেছিলেন, ‘CBI এর পেশ করা সমস্ত প্রমাণ আপনার বিরুদ্ধে। তাই সেই ভিত্তিতে শাস্তি আপনাকে পেতেই হবে।’ কিন্তু বিচারপতির বক্তব্যের মাঝেই বারংবার নিজেকে নির্দোষ বলে বলে দাবি করে চলেছেন সঞ্জয়। তখনই সঞ্জয়কে থামিয়ে দিয়ে বিচারপতি জানিয়েছিলেন যে “ আপনার যা বলার তা সোমবার দিন জানাবেন।” আজই সেই দিন।
আজও নির্দোষ বলে দাবি সঞ্জয়ের
আজ সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে শিয়ালদহ আদালতে এসে পৌঁছয় সঞ্জয় রায়। কলকাতা পুলিশের প্রিজন ভ্যানে নিয়ে আনা হয় তাকে। এবং সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে এজলাসে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। এদিকে আজও অভিযুক্ত সঞ্জয় রাই নিজেকে নির্দোষ বলে সকলের সামনে দাবি করলেন। তিনি জানালেন, ‘আমাকে দিয়ে যেরকম ভাবে ইচ্ছা, যেখানে সেখানে সই করানো হয়েছে। আমার মেডিক্যাল করতে নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’ সঙ্গে সঙ্গে তাঁর কথা থামিয়ে দিয়ে বিচারক অনির্বাণ দাস বলেন, ‘আমার বিচার্য বিষয় হচ্ছে যা যা এভিডেন্স এসেছে তার উপর ভিত্তি করে বিচার করা।’ আর তাতেই সকলের মনে হয়েছিল এবারেই হয়ত বিচারপতি সাজা ঘোষণা করবেন।
কিন্তু না, তিনি তার আগেই বিচারের জন্য সময় চেয়ে নিলেন। এদিকে সাজা ঘোষণার দিনেও সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায় আরজি করে নিহত চিকিৎসক ছাত্রীর পরিবারকে। এই বিষয়ে নির্যাতিতা ছাত্রীর মা বলেন,”সিবিআই কোনওভাবে প্রভাবিত হয়েছে বলে ধারনা আমাদের। তা না হলে মামলার মূল জায়গায় তাঁরা কেন পৌঁছতে চাইছে না?” এখন দেখার পালা আদালত ১৬৪ দিনের মাথায় কোন শাস্তি সঞ্জয়ের জন্য নির্ধারণ করেছেন। গোটা রাজ্য তো বটেই, গোটা দেশের নজর আজ সে দিকে।