পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ সাধারণ মানুষের যাতায়াতের সবচেয়ে সাশ্রয়ী ও নির্ভরযোগ্য যাতায়াতের মাধ্যম হল ট্রেন। প্রতিয়িনিত যাত্রীদের আরও উন্নত পরিষেবা দেওয়ার স্বার্থে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ। তবে এবার জানা যাচ্ছে যাদের জন্য কাজ তারাই বাধা দিচ্ছেন! শিয়ালদহ ডিভিশনের (Sealdah) কিছু অংশে কাজ করতে দিয়ে বারংবার বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে রেলকে। তাই এবার মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি জানানো হবে বলে জানা যাচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি শিয়ালদহ ডিআরএমএর
শিয়ালদহ ডিভিশনে রেললাইনের দুই ধারে ফেন্সিংয়ের কাজ চালু হয়েছে। কারণ দীর্ঘদিন ধরেই ট্রেনের শ্লথ গতি নিয়ে অভিযোগ আসছিল। এর অন্যতম একটি কারণ লাইনের দুই দিকে কোনো ব্যারিকেড বা ফেন্সিং না থাকায় যখন তখন গাড়ি ঢুকে পড়ত। তাই এই সমস্যার সমাধানে ফেন্সিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় শিয়ালদহ ডিআরএমের তরফ থেকে। কিন্তু মুশকিল এখানেই, জমি ইন্সপেকশনে গেলে মাঝপথেই ফিরে আসতে হচ্ছে তাদের।
বারেবারে বাধার সম্মুখীন রেল
বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে শিয়ালদহ থেকে কল্যাণী, শান্তিপুর /নৈহাটী লাইনে একাধিকবার কয়েক ঘন্টা করে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ইন্সপেকশন ট্রেনকে। এভাবে চলতে থাকলে রেলের নিজস্ব জমি উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। ফলে রক্ষণাবেক্ষণের কাজের পাশাপাশি নতুন লাইন পাতার কাজও ব্যাহত বা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনকি পুলিশের তরফ থেকেও তেমন কোনো সাহায্য মিলছে না বলে অভিযোগ রেলের। তাই এবার মুখ্যমন্ত্রীকে চিহ্তি দেওয়া হয়ে শিয়ালদহ ডিভিশনের তরফ থেকে এমনটাই খবর পাওয়া যাচ্ছে। যেখানে রাজ্য পুলিশ ও রাজনৈতিক দলের সাহায্যে প্রয়োজন বলে জানানো হবে।
বন্ধ হয়ে যেতে পারে ভবিষ্যতের প্রজেক্ট
এদিন জমি উদ্ধার প্রসঙ্গে শিয়ালদহ ডিভিশনের এক কর্তা জানান, ‘এভাবেই যদি চলতে থাকে তাহলে ভবিষ্যতে রাজ্যের ভাগ্যে কোনো রেল প্রকল্প আসবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যাচ্ছে’। শিয়ালদহ ডিভিশনের ডিপিও একলব্য চক্রবর্তীর মতে, রেলের কর্মীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে, কারা আটকাচ্ছেন? না যাদের নিরাপত্তার জন্য কাজ করা হচ্ছে। বেশ কিছুদিন ধরেই এই এলাকাগুলিতে রান ওভার বা ট্রেনে কাটা পড়ার মত দুর্ঘটনার খবর মিলেছে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকেও এই বিষয়ে খবর দেওয়া হয়েছে’।
আরও পড়ুনঃ ৩৫০০০ কোটি বিনিয়োগের আশা, ১ লক্ষ কর্মসংস্থান, দেউচা পাঁচামি নিয়ে মেগা প্ল্যান নবান্নর
কিছুদিন আগেই লোকসভায় কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব রাজ্যে রেলের অগ্রগতি সম্পর্কে কিছু তথ্য পেশ করেন। সেখানেই জানানো হয়ে বাংলায় রেলের উন্নয়ন থমকে গিয়েছে। বহু জায়গায় জমি চাইলেও পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি দখল হয়ে যাওয়ার রেলের জমি উদ্ধার করতে পুলিশের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ুনঃ সিগন্যাল নেই? এবার যেকোনো নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারবেন BSNL, Jio, Airtel-র গ্রাহকরা
প্রসঙ্গত, রেলের এহেন অভিযোগ বেকার কথাবার্তা বলে জানালেন কলকাতার চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তার মতে, প্রচুর জায়গায় রেল লোকেদের তুলে দিচ্ছে। রামপুরহাটেও তুলে দিয়েছে। এগুলিও পলিটিক্যাল কথা। গরিবদের আমরা সবসময়ই সাহায্য করি, কিন্তু শীতের মধ্যে রাতারাতি তুলে দিলে যাবে কোথায়?’