প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: এবার স্কুলের মিড ডে মিলে দেখা গেল বিভেদের ছায়া! হিন্দু আর মুসলিম ছাত্রদের হাঁড়ি আলাদা করে পরিবেশন করা হয় মিড ডে মিল (Mid Day Meal)! এমনকি খেতে বসার জায়গাও আলাদা! এমনই ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলি ১ নম্বর ব্লকের নাদনঘাট থানা এলাকা থেকে। আর তাতেই রাজ্য সরকারকে তুলোধনা করল বিরোধী দল। প্রশ্ন উঠছে তবে কি পড়ুয়াদের এখন থেকেই ধর্ম বিভেদের পাঠ দিতে চাইছে এই স্কুল?
হাঁড়ি আলাদা পড়ুয়াদের!
ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলির কিশোরীগঞ্জ মনমোহনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা রয়েছে মোট ৭২ জন। তার মধ্যে ৪৩ জন হিন্দু ও ২৯ জন মুসলিম পরিবারের পড়ুয়া। সেই স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন সব মিলিয়ে ৪ জন। আর পাঁচটা সাধারণ স্কুলের মত এই স্কুলেও পড়াশোনা সহ সবকিছু একই ক্লাস ঘর হয়ে থাকে।
কিন্তু নজরকাড়া বিষয় হল এই স্কুলে মিড ডে মিল রান্নার হেঁশেলে রয়েছে ২টি LPG ওভেন। জানা গিয়েছে এই দুই ওভেনে নাকি আলাদা আলাদা রান্না হয় হিন্দু ও মুসলিম ছাত্রদের মিড ডে মিল খাবারের প্রস্তুতির জন্য।
ধর্মের বিভেদ নিয়ে উঠছে একরাশ প্রশ্ন
এই স্কুলে শুধু রান্নাই আলাদা হয় তা নয়, হিন্দু ও মুসলিম ছাত্রছাত্রীরা নাকি আলাদা আলাদা জায়গায় বসে মিড ডে মিল খায়। এমনকি তাঁদের রান্নার লোকও আলাদা। হিন্দু ছাত্রদের মিড ডে মিল (Mid Day Meal) রান্না করেন সোনালি মজুমদার। বিদ্যালয়ের মত এমন পরিবেশে এইরূপ ধর্মবিদ্বেষের চিত্র সকলকে রীতিমত অবাক করে তুলেছে।
এদিকে আশপাশের গ্রামগুলিতে হিন্দু-মুসলমান এই দুই ভিন্ন সম্প্রদায়ের একত্রে বাস। কখনও কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি আজ পর্যন্ত। তা হলে কেন স্কুলের খাবারে ভেদাভেদ তা নিয়ে উঠছে অসংখ্য প্রশ্ন।
কী বলছেন প্রধান শিক্ষক?
এই প্রসঙ্গে স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাপস ঘোষ বলেন, ‘আমি বছরখানেক হল এখানে প্রধান শিক্ষক হয়ে এসেছি। এখানে বহু বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে। এজন্য স্কুলকে বাড়তি খরচ বইতে হয়। ২ জায়গায় রান্না করতে প্রায় দ্বিগুন গ্যাস খরচ হয়। জিনিসপত্র আলাদা রাখতেও বাড়তি টাকা দিতে হয়। আমি অভিভাবকদের নিয়ে এই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু অভিভাবকরা সহমত না হওয়ায় পারিনি।” তার জেরেই বিতর্কের আবহ তৈরী হয়েছে।
আরও পড়ুন: “আমার কাঁধে তিরঙ্গা…”, মহাকাশে পৌঁছে ভারতের উদ্দেশ্যে প্রথম বার্তা শুভাংশুর
স্কুলে মিড ডে মিল নিয়ে ধর্মের বিভেদ নিয়ে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মোবিল হোসেন মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি জানার পরেই, স্কুল পরিদর্শকের নজরে আনা হয়েছে। সব পড়ুয়ার মিডডে মিল এক সঙ্গে রান্না ও খাওয়ার ব্যবস্থার চেষ্টা করছে পঞ্চায়েত।’’
অন্যদিকে কালনার মহকুমা শাসক শুভম আগরওয়াল মঙ্গলবারই মৌখিকভাবে জানিয়েছিলেন যে “ স্কুলের এই অপ্রীতিকর ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই দফতরের প্রতিনিধিদের স্কুলে পাঠানো হয়েছিল। এমনকি SI ও BDO দের নির্দেশ দেওয়া আছে ভবিষ্যতে এমন যেন না হয়।”
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |