কলকাতাঃ ৯ আগস্ট, ২০২৪…বাংলা তথা সমগ্র দেশবাসী এই দিনটা হয়ত চাইলেও কোনওদিন ভুলতে পারবেন না। সেদিন আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সেমিনার রুমে তরুণী চিকিৎসকের ক্ষত বিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনার বীভৎসতা সমগ্র দেশকে রীতিমতো নাড়িয়ে রেখে দিয়েছে। জায়গায় জায়গায় চলছে বিক্ষোভ, মিছিল সমাবেশ। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন। সেইসঙ্গে বিচার চেয়ে পথে নেমেছে স্কুল পড়ুয়ারাও। তবে আচমকাই যেন ঘটল ছন্দপতন। এবার বাংলার দুই স্কুলকে আরজি কর -কাণ্ডের প্রতিবাদ মিছিলের অনুমতি দিল না পুলিশ। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন।
মিছিলের অনুমতি দিল না পুলিশ
জানা গিয়েছে, আরজি কর ঘটনার প্রতিবাদে বর্ধমানের দুটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল গত ১৮ আগস্ট একটি প্রতিবাদ মিছিল করার জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়। তবে পুলিশের তরফ থেকে সেই মিছিলের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এদিকে ২১ আগস্ট ফের মিছিলের জন্যে অনুমতি চাওয়া হয়। তবে এবারও দুটি স্কুলকে খালি হাতে ফিরতে হয়। এরপরেই কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় স্কুলগুলি।
এদিকে এহেন ঘটনায় সরব হয়েছে স্কুলগুলি। কারণ সুপ্রিম কোর্ট গত মঙ্গলবার মামলার শুনানি চলাকালীন সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছিল যে আন্দোলনকারীদের ওপর কোনও আক্রমণ বা মিটিং মিছিলে কোনওরকম পুলিশের তরফে বলপ্রয়োগ করা যাবে না। এই বিষয়ে একটি স্কুলের চেয়ারম্যান সঞ্জয় গুপ্তা জানান, মিছিলে অংশ নিতে ইচ্ছুক শিক্ষক, স্কুলের অশিক্ষ কর্মী, অভিভাবক, পড়ুয়া সবাই। তাও পুলিশ অনুমতি দিচ্ছে না। তবে অনুমতি না মিললেও ২৩ অগস্ট তারা মিছিল বের করবেন বলে জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই বিষয়টি পুলিশকে লিখিত আকারে জানানো হয়েছে। এছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি, পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসকদের সেই চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরেও বিতর্ক
শুধু বর্ধমানেই নয়, আরজি করের ঘটনায় মিছিল করা নিয়ে এবার বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও। সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্কুল পরিদর্শকের তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হল যে স্কুলের বাইরে কোনওরকম কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারবে না পড়ুয়ারা। শুধুমাত্র স্কুলশিক্ষা দফতরের আয়োজিত কোনও অনুষ্ঠানেই তারা যোগ দিতে পারবে। আর এই ঘটনায় সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
Hirak Rani is trembling with fear. The spontaneous Public Outrage has cornered her Govt and shaken up her whole Administration.
The Public movement is spreading across the State and more and more people are hitting the streets.A certain call for ‘Nabanna Avijan’ by apolitical… pic.twitter.com/P7JXOYL6DJ
— Suvendu Adhikari (@SuvenduWB) August 22, 2024
নির্দেশিকা প্রসঙ্গে নাম না করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘হীরক রানি’ বলে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু বলেন, ‘ভয়ে কাঁপছেন হীরক রানি। স্বতঃস্ফূর্ত যে জনরোষ তৈরি হয়েছে, তাতে কোণঠাসা হয়ে গিয়েছে সরকার। পুরো প্রশাসনকে নাড়িয়ে দিয়েছে (সেই জনরোষ)। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত জনগণের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। আরও বেশি সংখ্যক মানুষ রাস্তায় নেমেছেন।’