প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্য সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’ (Taruner Swapna) প্রকল্পে স্কুলের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার জন্য দশ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সেই জন্য পুজোর ছুটি পড়ার আগেই সকল সরকারী স্কুলগুলির দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বাংলা শিক্ষা পোর্টালে ছাত্রছাত্রীদের তথ্য আপলোড করা হয়। কিন্তু সেই তথ্য আপলোডেই একের পর এক দুর্নীতি ঘটতে থাকে। ট্যাবের টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকলেও পরক্ষণে তা অন্য পোর্টালে স্থানান্তরিত হয়। তারপরই বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। উঠে আসে একাধিক অভিযোগ, জড়ায় বহু নাম। ধরাও পড়ে একাধিক। আর এই আবহেই এবার ঘটে গেল আরেক ঘটনা।
Taruner Swapna প্রকল্পে ট্যাবের টাকা পেতেই টেস্ট ছেড়ে গায়েব একাধিক পরীক্ষার্থী
এই মুহুর্তে রাজ্যে সমস্ত সরকারী স্কুলগুলিতে দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের টেস্ট পরীক্ষা চলছে। কিন্তু সেই টেস্ট পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরেই লক্ষ্য করা গিয়েছে বেশ কিছু স্কুলে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসেনি। এই ধরনের ঘটনা একাধিক সরকারী স্কুলগুলিতে ঘটতে দেখা গিয়েছে। কয়েকটি স্কুলে একেবারে ৪০-৫০ জন পরীক্ষার্থী গায়েব। আর এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবে শিক্ষকদের একাংশের আশঙ্কা, ট্যাবের টাকা ওই পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাওয়ার পরেই তারা স্কুলে আসা ছেড়ে দিয়েছে।
শিক্ষা দফতরকে দায়ী করছে প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন!
এই প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’ সরাসরি রাজ্য শিক্ষা দফতর এর দিকে আঙুল তুলেছে। তাঁদের বক্তব্য, “রাজ্য সরকারকে অনেকবার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল যে ট্যাবের টাকা পড়ুয়াদের না দিয়ে বরং স্কুলে স্কুলে স্মার্ট ক্লাসের পরিকাঠামো তৈরি করা হোক। তাতে সার্বিক বিকাশ হবে সকলের। কিন্তু সে নিয়ে একবারের জন্য ভাবনাচিন্তা করেনি সরকার।” অন্যদিকে মুর্শিদাবাদের নবপল্লি জেসিএস হাইস্কুলের শিক্ষক রাজীব মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে ১৮৩ জনের উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট দেওয়ার কথা। এ বার টেস্টে অনুপস্থিত ৬৩ জন। ওরা সবাই কিন্তু ট্যাব পেয়েছে। ট্যাবের ১০ হাজার টাকা টাকা ঢোকার পরেই ওরা স্কুলে অনুপস্থিত।’’
যদিও শিক্ষা দফতরের কর্তাদের মুখে অন্য সুর। তাঁদের পাল্টা দাবি, “প্রতি বারই টেস্টে নানা কারণে কিছু পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকে। তাই বলে ট্যাবের টাকা ঢোকার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। ট্যাব বিপুল সংখ্যক উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়ার পড়াশোনার কাজে লাগে। সুতরাং রাজ্য সরকার ভেবে চিন্তেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”