প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: শেষবার ২০২২ সালে মিড ডে মিলের (Midday Meal Scheme) বরাদ্দ বাড়িয়েছিল কেন্দ্র। সেবার প্রাথমিকে মাথাপিছু বরাদ্দ বাড়িয়ে করা হয়েছিল ৫.৪৫ টাকা। আর মাথাপিছু বরাদ্দ বেড়ে ৮.১৭ টাকা হয়েছিল উচ্চ প্রাথমিকে। এরপর কোনো বরাদ্দ দেয়নি কেন্দ্র। টানা দুই বছর পর চলতি মাসে প্রাথমিক এবং উচ্চ-প্রাথমিকের জন্য মিড-ডে মিলের বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হল। তবে, মাথাপিছু মাত্র ৭৫ পয়সা বৃদ্ধি করায়, তা নিয়ে ক্ষোভ দেখা গিয়েছিল শিক্ষা মহলে। আর এই ক্ষোভের মধ্যেই উঠে এল আরও এক বিতর্ক। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশিরভাগ স্কুলে নাকি মিড-ডে মিল প্রকল্প চলছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছাড়াই।
ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছাড়াই মিলছে মিড-ডে মিলের বরাদ্দ
সাধারণত, ভিলেজ এডুকেশন কমিটি (ভিইসি), ওয়ার্ড এডুকেশন কমিটি (ডব্লিউইসি), বিভিন্ন স্বর্নিভর গোষ্ঠীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মিড ডে মিলের টাকা কেন্দ্রের থেকে পাঠানো হত। সেখান থেকে টাকা স্কুলগুলিতে দেওয়া হয় এবং সেখানে মিড ডে মিলের ব্যবস্থা করা হত। কিন্তু সূত্রের খবর, দক্ষিণবঙ্গের বেশিরভাগ স্কুলে পিএম পোষন প্রকল্পের আওতায় মিড-ডে মিল প্রকল্প চলছে কোনো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছাড়াই। অথচ স্কুলগুলিতে টাকা পৌঁছে যাচ্ছে। এমনকি বরাদ্দ টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে ওই জেলার বিরুদ্ধে। যার ফলে এবার সমগ্র শিক্ষা মিশনের তরফ থেকে সংশ্লিষ্ট জেলাকে নতুন করে পিএম পোষণ অ্যাকাউন্ট চালু করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগের আঙুল উঠছে শিক্ষা দফতরের দিকে
এই দুর্নীতি প্রসঙ্গে জেলা পরিদর্শক বলেন, “সমস্ত স্কুলের পিএম পোষণ অ্যাকাউন্টগুলিকে সক্রিয় রাখা এবং আলাদা করে অ্যাকাউন্ট তৈরি করার নির্দেশ মিলেছে, তাই সেই ভাবে পরবর্তী কালে কাজ করা হবে, যাতে কাজের স্বচ্ছতা বজায় থাকে। নির্দেশের বাইরে কোনও কিছুই যাতে না হয়, বা যদি হয়ে থাকে, তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে।” এই প্রসঙ্গে, শিক্ষকমহলের একাংশ আলাদা অ্যাকাউন্টের অস্তিত্ব নিয়েই একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের দাবি, বহু স্কুলেরই আলাদা অ্যাকাউন্ট নেই, অথচ টাকা পৌঁছে যাচ্ছে! প্রশাসনের মদত না থাকলে DI-দের পক্ষে এই কাজ কখনই সম্ভব নয়। এর ফলে শিক্ষা দফতরের গাফিলতির ছবি আরও একবার স্পষ্ট হল।
প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সংগঠন অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “নিয়মের বাইরে গিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠী, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি যে ভাবে কাজ করেছে, তার দায় স্কুলগুলির উপর চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলস্বরূপ ছেলেমেয়েরা ভাল খাবার খেতে পায়নি। তাই স্কুলগুলিকে এই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।”