প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: যোগ্য অযোগ্য নির্ধারণের ঠেলাঠেলির মাঝেই নিয়োগ প্রক্রিয়া (SSC Case) সংক্রান্ত মামলায় বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল সুপ্রিম কোর্ট। এসএসসি নিয়োগ মামলায় কতটা দুর্নীতি লুকিয়ে রয়েছে তা দীর্ঘ তদন্তেও জানা গেল না। যার ফলস্বরূপ এবার ২০১৬ সালের গোটা প্যানেলই বাতিল করে দিল শীর্ষ আদালত। গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার কথাতেই চাকরি গেল ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর। রীতিমত মাটি কেঁপে উঠল চাকরিহারাদের। অনেকে এই সিদ্ধান্তে এতটাই মর্মাহত হয়েছেন যে চোখের জল বাধ মানতে চায়নি। আর এই আবহে নিয়োগ সংক্রান্ত আরও একটি মামলার শুনানি হতে চলেছে সুপ্রিম কোর্টে। এবং সেই মামলার শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৮ এপ্রিল।
কীসের মামলা?
সুপারনিউমেরারি পোস্ট নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। ২০২২ সালে সেই সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি রশিদির বেঞ্চ জানিয়েছিল, রাজ্য সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি, যারা অতিরিক্ত পদ তৈরির ক্ষেত্রে অনুমোদন দিয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। কিন্তু গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে সেই রায়ের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে যায় স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং রাজ্য সরকার। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশের উপর সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দেয়। সেই সময় তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, রাজ্য সরকারি অফিসার বা মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত করতে পারবে না সিবিআই।
হাইকোর্টের পথেই সুপ্রিম কোর্ট
কিন্তু সেই রায়ে গতকাল এবার বড় বদল আনল শীর্ষ আদালত। গতকাল স্কুল সার্ভিস কমিশনের চাকরি বাতিলের মামলায় রায় দান করার পরমুহুর্তেই সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়ে দেয় যে, এই মামলার তদন্ত চালিয়ে যাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI। অর্থাৎ ক্যাবিনেটের বিরুদ্ধে তদন্ত সংক্রান্ত যে নির্দেশ হাইকোর্ট দিয়েছিল সেই নির্দেশই ফের বহাল রাখে সর্বোচ্চ আদালত। আর আগামী ৮ এপ্রিল গোটা মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশের মামলাই শুনতে চলেছে সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুনঃ কীভাবে নতুন নিয়োগ, কারা আবেদন যোগ্য, কারা নয়? চাকরি বাতিল নিয়ে জানাল সুপ্রিম কোর্ট
প্রসঙ্গত, দুর্নীতির অভিযোগে ২০২৪ সালের ২২ এপ্রিল, কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে বাতিল হয়েছিল ২০১৬-র এসএসসি প্যানেল। সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে রাজ্য সরকার, স্কুল সার্ভিস কমিশন ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। শীর্ষ আদালতে দফায় দফায় সেই মামলার শুনানি হয়। গত ১০ ফেব্রুয়ারি ছিল শেষ শুনানি। তখন সিবিআই জানিয়েছে, তারা চাইছে, কলকাতা হাই কোর্টের ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের রায় বহাল থাকুক। শেষে গতকাল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি চূড়ান্ত রায় শোনালেন।