প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: স্কুল সার্ভিস কমিশননের নিয়োগ দুর্নীতি (SSC Recruitment Case) নিয়ে রীতিমত তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এই মুহূর্তে রাজ্যে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরিহারা ২৫ হাজার ৭৫৩ জন ৷ আর এই প্রায় ২৬ হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ এইমুহুর্তে সম্পূর্ণ অন্ধকারে ডুবে গিয়েছে। আর এই বয়সে নতুন করে পরীক্ষা দেওয়ার মত অবস্থা কারোর নেই। রীতিমত মাথায় বাজ পড়েছে সকলের। আর ঠিক একই হাল নদিয়ার তাহেরপুরের বাসিন্দা সোমনাথ মালোর৷ তিনি এসএসসি-র গ্রুপ-সি’র কর্মী ছিলেন ৷ ৪৩ বছর বয়সে চাকরিহারা এই প্রাক্তন অ্যাথলিটের জীবনে উঠে এল এক আলাদা কাহিনী।
ক্রীড়া জগতে বড় নাম কিনেছেন সোমনাথ
মাত্র তিন বছর বয়সে ভুল চিকিৎসায় প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু থেমে থাকেনি জীবনযুদ্ধের লড়াই। ২০০২ সালে হাই জাম্পে জিতে সোনার মেডেল জিতেছিলেন সোমনাথ। দক্ষিণ কোরিয়ায় উড়িয়েছিলেন ভারতের পতাকা। ক্রীড়া জগতে তাঁর এক আলাদাই নাম ছিল। নিজের স্বপ্নকে আরও দূরে নিয়ে যেতে পারতেন সোমনাথ। কিন্তু সেই সময় এই আনন্দ এবং স্বপ্ন ছোঁয়ার মাঝে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় মারণরোগ ক্যান্সার। ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হন তিনি। কিন্তু বাড়িতে বসে থাকলে তাঁর চলবে না সংসার। তাই ক্রীড়া জগৎ থেকে বেরিয়ে এসে ২০১৬ সালে চাকরি পান সরকারি স্কুলের ক্লার্ক পদে। যা বেতন পেতেন, তাতেই সংসার চালিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন সোমনাথ। কিন্তু দুর্যোগের মেঘ ঘনিয়ে আসল গত বছর।
ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েও নেই চাকরি
নদিয়ার বীরনগর হাইস্কুলের গ্রুপ সি পদে কর্মরত ছিলেন সোমনাথ মালো। পরিবারে রয়েছে কন্যাসন্তান ও স্ত্রী। ২০২৪ এর ২২ এপ্রিল ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল। সেই সময় বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন সোমনাথ মালো। কিন্তু পরে যখন সেই রায়কে চ্যালেঞ্জে করে স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল তখন কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলেন তিনি। মনে মনে আশা করেছিলেন যে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু সেগুরে বালি। উল্টে সব কিছু যেন এক লহমায় ভেঙে গেল। সকলের চাকরি চলে গেল। ব্যতিক্রম কেবলমাত্র সোমা দাস। অত্যন্ত মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে চাকরি যায়নি তাঁর।
জানা গিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে বহাল রেখেই চাকরি রয়েছে সোমা দাসের। তিনি ক্যানসার আক্রান্ত। সেকারণে তাঁর চাকরি রয়েছে। তবে শিক্ষক শিক্ষিকাদের একাংশের দাবি, যাঁদের চাকরি গিয়েছে তাঁদের মধ্যে একাধিক জন ক্যানসার আক্রান্ত। তাই সেক্ষেত্রে নদিয়ার তাহেরপুর পুরসভার অন্তর্গত ডি ব্লকের বাসিন্দা সোমনাথও চাইছেন যে, সোমা দাসের মতো তাঁর ক্ষেত্রেও চাকরির সুযোগটা যেন দেওয়া হয়। কারণ তিনিও ক্যান্সার আক্রান্ত। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাঁর আর্জি, তাঁর পরিবারকে যেন বাঁচান তিনি। সোনার মেডেলটা হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে দেখতে সোমনাথ বলেন, “দেশের জন্য মেডেল এনেছিলাম। আজ আমার চাকরি নেই। এ তো দেশের লজ্জা।”
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |