LPG থাকতেও দেশের ৬৭% কেরোসিন নেয় বাংলা! পাচার হচ্ছে? রাজ্য সরকারকে চিঠি কেন্দ্রের

Published on:

kerosene

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: প্রথম থেকেই একাধিক প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের বনিবনা একদমই হয় না। আর্থিক তছরুপের অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা, একশো দিনের কাজের টাকা সহ স্বাস্থ্য খাতেও বাংলার জন্য বরাদ্দ বন্ধ করেছে কেন্দ্র। তাই সেক্ষেত্রে রাজ্যের ভান্ডারে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। আর এই আবহেই এবার রাজ্যে কেরোসিন তেল বণ্টন নিয়ে বড় অভিযোগ উঠে এল কেন্দ্রের তরফে।

গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন Join Now

বাংলায় একটুও কমেনি কেরোসিনের চাহিদা

দেশবাসীর উদ্দেশে ভর্তুকিযুক্ত কেরোসিন তেল কেন্দ্রীয় সরকার রান্না এবং আলো জ্বালানোর জন্য দিয়ে থাকে। আর সেই তেল গণবন্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে উপভোক্তাদের দেয় রাজ্য। তবে এইমুহুর্তে প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ এসে যাওয়ায় এবং LPG গ্যাসের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দেশের অন্যান্য রাজ্যে একটু একটু করে কেন্দ্রের কাছে কেরোসিনের চাহিদা কমে গিয়েছে। সকল রাজ্যে কেরোসিনের গ্রাফ কমে গেলেও বাংলায় একটুও কমেনি কেরোসিনের চাহিদা। আর এদিকে চাহিদা না কমলেও কেন্দ্রের তরফেই অনেকটা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে কেরোসিনের পরিমাণ।

কেরোসিনের ‘অপব্যবহার’ বন্ধ করতে চিঠি

আর কেন্দ্রের এই কেরোসিনের পরিমাণ হঠাৎ কমিয়ে দেওয়া নিয়ে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল কেরোসিন এজেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ আদালতে যায়। অভিযোগ জানানো হয়। অন্য দিকে, কেন্দ্রের অভিযোগ, বাংলায় পেট্রোল, ডিজেলের মতো জ্বালানিতে ‘ভেজাল’ হিসাবে কেরোসিন ব্যবহার করা হয়। শুধু তাই নয়, কেরোসিনের ‘অপব্যবহার’ বন্ধ করার জন্য চলতি বছর গত জুন মাসেই পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক রাজ্য সরকারকে চিঠি দেয় এই বিষয়ে। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী সুরেশ গোপ সম্প্রতি সংসদে যে লিখিত বিবৃতি দিয়েছেন, তাতে সম্পূর্ণ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে Join Now

ওই লিখিত বিবৃতি অনুযায়ী জানা হয়েছে, গত অর্থবর্ষে দেশের সব রাজ্যে মিলিয়ে মোট ১০,৬০,৫২৪ কিলোলিটার তেল পাঠিয়েছে কেন্দ্র। তার মধ্যে সর্বাধিক এসেছে পশ্চিমবঙ্গে। মোট পরিমাণ ৭,০৪,০১৬ কিলোলিটার। যা দেশের মোট কেরোসিনের ৬৬.৩৮ শতাংশ। এর পরেই রয়েছে বিহার। তারা পেয়েছে ৬.০২ শতাংশ কেরোসিন। এর পরে ওড়িশা, অসম, মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, ঝাড়খণ্ডের কেরোসিন প্রাপ্তির পরিমাণ ২ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে। উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, রাজস্থানের মতো কয়েকটি রাজ্যে এখন এক ফোঁটাও কেরোসিন ব্যবহার হয় না। এদিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যের খাদ্য দফতরের মাধ্যমে শুধুমাত্র রেশনকার্ড রয়েছে, এমন উপভোক্তাদেরই নির্দিষ্ট পরিমাণে কেরোসিন দেওয়া হয়।

LPG গ্যাসের সংযোগ থাকলেও বাংলায় কেরোসিনের চাহিদা বাড়ছে

কিন্তু পরিসংখ্যান সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের মে মাসে ভারত সরকার ‘প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা’ চালু করার পরে দেশের সব এলাকায় গরিব মহিলাদের নামে বিনামূল্যে রান্নার গ্যাসের সংযোগ করা হয়েছে। সেখানে মোট উপভোক্তার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০.৩৩ কোটি। এমনকি দেশে মোট এলপিজি ব্যবহারকারী পরিবারের সংখ্যা ৩২.৮৩ কোটি। আর এই এলপিজি সংযোগ পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের সর্বত্র প্রায় সব বাড়িতেই চালু হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কেরোসিন ব্যবহারের প্রয়োজন অনেকটাই কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এর পরেও এই রাজ্যে বেশ পরিমাণ কেরোসিন প্রয়োজন হচ্ছে। তাতেই উঠছে প্রশ্ন।

আর এই প্রশ্ন উঠতেই রাজ্যে বিরোধী দলের মধ্যে নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এই প্রসঙ্গে রাজ্যসভা সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য শাসকদলের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ করেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাংলা পিছিয়ে রয়েছে ভাবলে ভুল হবে। এখান থেকে বিপুল পরিমাণে কেন্দ্রের দেওয়া ভর্তুকিযুক্ত কেরোসিন বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে অনবরত। এদিকে খোঁজ করলে দেখা যাবে বাংলায় এমন কোনো পরিবার নেই যারা বাড়িতে কেরোসিন ব্যবহার করেন।”

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥
X
Join Group