কেতুগ্রাম: বর্তমান সময়ে যেন বারবার প্রশ্নের মুখে উঠে আসছে বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা। SSC থেকে শুরু করে টেট দুর্নীতি, প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষক শিক্ষিকার চাকরি ঝুলে থাকা, সব মিলিয়ে যেন বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা আর বিতর্ক যেন একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠেছে। একদিকে যখন হাজার হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চাকরি প্রশ্নের মুখে, সেখানে এখনও অবধি শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে গ্রাম বাংলার বহু স্কুল। যেমন আসা যাক কেতুগ্রামের বেরুগ্রামের প্রসঙ্গে। এখানকার একটি স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৬১৬ জন। সেখানে বরাদ্দ নাকি মাত্র ৪ জন শিক্ষক। আর এই নিয়ে এবার বিশেষ আর্জি জানাল পড়ুয়ারা।
বিশেষ আর্জি পড়ুয়াদের
দীর্ঘদিন ধরে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের বেরুগ্রাম বান্ধব বিদ্যাপীঠ শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে। কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেও কোনওরকম সুরাহা হয়নি। এদিকে শিক্ষক শিক্ষিকার অভাব ব্যাপকভাবে টের পাচ্ছে স্কুলের পড়ুয়ারাও। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ৪ জন শিক্ষকও। সব মিলিয়ে খুবই খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বেরুগ্রাম বান্ধব বিদ্যাপীঠে। পড়ুয়াদের বক্তব্য, মিড ডে মিল না, আমরা স্যার চাই।’
মিড ডে মিল না, স্যার চাইছে পড়ুয়ারা
এই বেরুগ্রাম বিদ্যাপীঠে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি মিলিয়ে ৬১৬ জন ছাত্র ছাত্রী রয়েছে। আর এত সংখ্যক পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ রয়েছেন মাত্র ৪ জন শিক্ষক। যাদের মধ্যে কিনা আবার ২ জন বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক, বাকি ২ জন আবার কর্মশিক্ষার শিক্ষক। এরা সকলেই পঠন-পাঠন থেকে শুরু করে স্কুলে মিড ডে মিলের বিষয়ে তদারকি করেন। এছাড়া প্যারা টিচার আছেন ৩ জন। তাঁদের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস নেওয়ার কথা থাকলেও, উঁচু ক্লাসও নিতে হয়।
আরও পড়ুনঃ বাবা নিখোঁজ, মা মানসিকভাবে অসুস্থ, তারপরেও বাংলার যুবকের সাফল্যের কাহিনী চোখে জল এনে দেবে
স্কুলের এক ছাত্রী বলছে, ‘আমরা মিড ডে মিল বা অন্য কিছুই চাইছি না। আমরা শুধু স্যর চাই। স্কুলে একটু পড়তে চাই। ভৌত বিজ্ঞান, জীবনবিজ্ঞান, অঙ্ক- অথচ বিজ্ঞানের শিক্ষক মাত্র একজন। ফলে স্কুলে শেখার সুযোগই থাকছে না। না চাইলেও টিউশন নিতে হচ্ছে বাইরে।’ অন্যদিকে স্কুলের শিক্ষক বিবেকানন্দ সিনহা জানান, ‘খুব কঠিন অবস্থায় চলছে স্কুল। মাধ্যমিক স্কুলে একজন ইতিহাস, একজন ইংরাজি, একজন কর্মশিক্ষা ও একজন শারীরশিক্ষার শিক্ষক আছেন। এতে কি সম্ভব?’ এছাড়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহম্মদ আলি নওয়াজ বলেন, ‘উৎসশ্রী প্রকল্পে আমাদের ৯ জন টিচার চলে গিয়েছেন। এখন আমরা ৪ জন আছি। এই ৪ জন নিয়েই বিভিন্ন ক্লাস চালাতে হয়। এরপর আবার কোনও ক্লাস ফাঁকা যায়। এক একজন মাস্টারমশাই তো দু’টো ক্লাস নিতে হয়। না চলার মতো করে স্কুল চলছে।’