প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: পুজোর আগেই নবান্নের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল যে দুর্গাপুজোর আগেই পড়ুয়াদের তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পে (Taruner Swapna Scheme 2024) ট্যাবের টাকা দেওয়া হবে। প্রায় ১৬ লক্ষ পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ঢুকবে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এর জন্য মোট ১৩৩ কোটি ৫৭ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে সরকারের অর্থ বাজেটে। যদিও সেপ্টেম্বর মাসেই রাজ্য সরকারের এই ট্যাবের টাকা দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির কারণে সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছিল। কিন্তু এই আবহেই আবার অনেক অভিযোগ তুলেছে যে দীপাবলি এসে গেলেও বেশির ভাগ পড়ুয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এখনও ঢোকেনি টাকা।
জানা গিয়েছে, পুজোর আগেই রাজ্য সরকার ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের আওতায় সরকারি এবং সরকার পোষিত স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়াদের প্রায় ১৬ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীদের ট্যাব কেনার টাকা দিতে শুরু করে। এ বারই প্রথম রাজ্য সরকার একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির সব পড়ুয়াকে এই টাকা দিচ্ছে। কিন্তু অনেকের অ্যাকাউন্টে টাকা না পৌঁছনো নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ বৃত্তিমূলক শিক্ষার্থীরা। এই প্রসঙ্গে শিক্ষা দফতর জানিয়েছেন যে সরকারি পোর্টালে পড়ুয়াদের নাম নথিভুক্ত না থাকার কারণেই এই জটিলতা তৈরি হয়েছে।
বিকাশ ভবনের নয়া পদক্ষেপ
শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন জেলার এখনও প্রায় চার থেকে ছ’হাজার পড়ুয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এখনও টাকা পৌঁছয়নি। যার পিছনে অন্যতম কারণ হল, অনেক ছাত্র ছাত্রী ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর ভুল দিয়েছে, অনেকে আবার অন্যের অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে ফেলেছে এর ফলে অনেকের টাকা ভুল জায়গায় চলে গিয়েছে। তবে শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান করতে চলেছে বিকাশ ভবন। আজ অর্থাৎ ৩০ অক্টোবর থেকেই সব পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছে কি না তা নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে এবং সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা দফতর।
কী বলছেন স্কুল পরিদর্শক?
দক্ষিণ ২৪ পরগনার পরিদর্শক নজরুল হক সিপাই জানান, “আমাদের জেলায় এক লাখ ১৫ হাজারের মতো পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা পাওয়ার কথা ছিল। তার মধ্যে ৪,৫০০ মতো পড়ুয়া এখনও পর্যন্ত সেই টাকা পায়নি। তবে দ্রুতই তারা টাকা পেয়ে যাবে।” সরকারী প্রকল্পের এমন গাফিলতি দেখে বেশ ক্ষুব্ধ বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি। সেই সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “বিদ্যালয়গুলোর পরিকাঠামো উন্নয়ন করতে ও শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী নিয়োগ করতে যদি এর দশ ভাগের এক ভাগ তৎপরতা দেখাত, তা হলে এই রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাটা বেঁচে যেত। সরকারি অর্থের অপচয় কী ভাবে করতে হয় তা এই সরকারের কাছ থেকে শেখা উচিত।”