সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দিনের পর দিন যেন আরো গরমের তেজ বাড়ছে! রাস্তায় বেরোলে যেন আগুনের গোলা গায়ে এসে লাগছে! আর এই আবহে একের পর এক রাজ্যের স্কুল-কলেজে গ্রীষ্মকালীন ছুটি (Summer Vacation) বাড়ানো হচ্ছে। সেই সূত্র ধরে দিল্লি, পাঞ্জাব থেকে শুরু করে রাজস্থান, বিহার, একাধিক রাজ্যে স্কুলে গরমের ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা দপ্তর।
তবে এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, বাংলাতেও কি আবার গরমের ছুটি বাড়বে? হ্যাঁ, এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। কেন অন্যান্য রাজ্যে ছুটি বাড়লেও বাংলাতে এখনও বাড়ানো হল না? নেপথ্যে রয়েছে কোন কারণ? চলুন আজকের প্রতিবেদনে জেনে নিই।
অন্যান্য রাজ্যের গরমের ছুটির কী অবস্থা?
তীব্র গরমের কবলে পড়ে দেশের একাধিক রাজ্যের স্কুলে গরমের ছুটি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। হ্যাঁ, দিল্লিতে 11 মে থেকে 30 জুন পর্যন্ত, পাঞ্জাব এবং হরিয়ানায় গোটা জুন মাস, উত্তরপ্রদেশে 15 জুন পর্যন্ত, বিহারে 21 জুন পর্যন্ত, রাজস্থানে 17 মে থেকে 30 জুন পর্যন্ত, ছত্তিশগড়ে 25 জুন ও মধ্যপ্রদেশে 15 জুন পর্যন্ত ছুটি দেওয়া হয়েছে। সোজা ভাষায় বলতে গেলে, উত্তর ও মধ্য ভারতের প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই গরমের ছুটি বাড়ানো হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে কেন ছুটি বাড়ানো হল না?
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, এ রাজ্যে গরমের ছুটি শুরু হয়েছিল ৩০ এপ্রিল থেকে, যা অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকটাই আগে। ফলে অন্যান্য বছরের ছুটির তুলনায় প্রায় ১০-১২ দিন বেশি ছুটি পেয়েছে রাজ্যের শিক্ষার্থীরা। সে কারণেই শিক্ষা দপ্তর ২ জুন স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও ছুটি বাড়ানো নিয়ে এখনো সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি।
ছুটি না বাড়ানোর পিছনে রয়েছে তিনটি বড় কারণ
পশ্চিমবঙ্গের স্কুল-কলেজে ছুটি না বাড়ানোর নেপথ্যে রয়েছে তিন বড়সড় কারণ। প্রথমত, গত কয়েক বছর ধরে করোনা, গরম এবং ঝড়-বৃষ্টির কারণে দীর্ঘ সময় ধরে স্কুল বন্ধ থেখেছে। যার ফলে সিলেবাস ঠিকভাবে শেষ করা যায়নি। আর বিশেষ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য সিলেবাস শেষ না হওয়া বিরাট সমস্যা।
আরও পড়ুনঃ গ্রীষ্মে এবার ‘গরম’ উপহার, যাত্রী সুবিধার্থে বড় ঘোষণা রেলের
দ্বিতীয়ত, এবছর উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে চালু হয়েছে সেমিস্টার সিস্টেম পাঠক্রম। হ্যাঁ, সেজন্য সময় মতো সিলেবাস শেষ করানোর দায়িত্বটা শিক্ষকদের কাছে কার্যত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর অতিরিক্ত ছুটি পড়াশোনায় যে আরও ব্যাঘাত ঘটাবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
তৃতীয়ত, রাজ্যের বহু স্কুলে শিক্ষকের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। কারণ, সম্প্রতি এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বহু শিক্ষক চাকরি হারিয়েছে। ফলে যদি ছুটি আরো বাড়িয়ে দেওয়া হয়, তাহলে পড়াশোনার উপর প্রভাব পড়তে পারে। আর সেই ঘাটতি সামাল দিতেই সরকার এখনো ছুটি ঘোষণা করছে না।