প্রীতি পোদ্দার, হাওড়া: যত দিন যাচ্ছে ততই যেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তা বলয় আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। এর আগে ২০২২ সালের জুলাই মাসেই মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে পাঁচিল টপকে এক যুবক ঢুকে পড়েছিলেন। যা নিয়ে হুলুস্থুল কাণ্ড ঘটেছিল। ঠিক তার পরের বছরেই অর্থাৎ ২০২৩ সালের ২১ জুলাই একটি প্রাইভেট গাড়িতে করে এক যুবক হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে ঢোকার চেষ্টা করেছিল কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো কারণ জানা যায়নি। যার ফলে এই ঘটনার পর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। আর এই আবহেই ফের আরও এক যুবক মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য সটান নবান্নে ঢুকে গেল।
ঘটনাটি কী?
সূত্রের খবর, গতকাল অর্থাৎ সোমবার, নবান্ন সভাঘরের সামনে থেকে আটক করা হয় বছর ৩৫ এর এক যুবককে। ধৃত যুবকের নাম শেখ সমিরুল। এবং তাঁর উদ্দেশ্য ছিল নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করা। এই নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ নবান্নের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে তর্কাতর্কি করার পর সন্দেহভাজন ওই যুবককে আটক করা হয়। নিয়ে যাওয়া হয় শিবপুর থানায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে নবান্ন সভাঘরের দিকে সোজা এগিয়ে যান এক যুবক। স্বাভাবিকভাবেই, তাঁর কোনো অ্যাপয়েনমেন্ট বা অনুমোদন আছে কিনা, সে ব্যাপারে জানতে চান নিরাপত্তারক্ষীরা। সেরকম কোনো তথ্য না পাওয়ায় তাঁর নাম-পরিচয় সম্বন্ধে জানতে চাওয়া হয় ওই যুবককে। স্পষ্ট কোনও তথ্য না পেয়ে পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তার খাতিরে ওই যুবককে আটক করে। এবং সোজা শিবপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয় ওই যুবককে।
আর্থিক মন্দার কারণেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ যুবকের!
পুলিশি জেরায় ওই যুবক জানান, তিনি হাওড়ার বাঁকড়া এলাকার বাসিন্দা। পেশায় তিনি কাপড়ের ব্যবসায়ী। কিন্তু, লকডাউনের পর থেকে তাঁর ব্যবসা লাভের মুখ দেখেনি। আর্থিক মন্দায় ভুগছেন দীর্ঘদিন ধরে। ওই যুবক জানান, সাংসারিক জীবনেও অশান্তি রয়েছে তাঁর। স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে দিয়ে চলে গিয়েছেন। ব্যক্তিগত সমস্যায় পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বলে জানান তিনি। কিন্তু তিনি আদতেও সব সত্যি বলছে কিনা তা নিয়ে বেশ ধন্দেই রয়েছে সকলে। তাই তদন্ত চলছে জোর কদমে। তবে প্রাথমিক অনুমান করা হচ্ছে ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন।