প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে একাধিক বিষয় নিয়ে সংঘাত লেগেই রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল মিড ডে মিলের (Midday Meal Scheme)। রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে মিড-ডে মিলে ঠিকমতো ছাত্র ছাত্রীদের খাবার দেওয়া হচ্ছে কি না, তার খোঁজ নিতে রাজ্যে আসে কেন্দ্রীয় দল। কিন্তু মিড-ডে মিলের জন্যে যে টাকা কেন্দ্র থেকে বরাদ্দ করে, তাতে পড়ুয়াদের আদৌ কতটা পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার দেওয়া সম্ভব হয় তা নিয়ে এর আগে অনেকবার প্রশ্ন তুলেছিল রাজ্য সরকার। আর এবার মিড-ডে মিলের বরাদ্দ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ পেল শিক্ষক মহলেই।
মিড ডে মিলের জন্য রাজ্যে শেষ বার ২০২২ সালে বরাদ্দ বাড়িয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু এরপর প্রায় দু’বছর পর হয়ে গিয়েছে। এখনও একটুও বাড়েনি সেই বরাদ্দের পরিমাণ। তাতেও কালঘাম ছুটছে স্কুল কর্তৃপক্ষের। এদিকে বাজারে জিনিসপত্র বা সবজির দাম এতটাই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যে রীতিমত মাথায় বাজ পড়ছে সাধারণের। শুধু তাই নয় গ্যাসের দামও অত্যাধিক হারে বেড়েই চলেছে। তাইতো পুষ্টিকর খাবার জোগাতে গিয়ে কার্যত হিমশিম খেতে হচ্ছে স্কুলগুলিকে। অনেক সময় নিজেদের গচ্ছিত টাকা ব্যয় করতে হয় স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের। তাই তাদের দাবি এবার খুব শীঘ্রই কেন্দ্র যেন মিড ডে মিলের বরাদ্দ বাড়ায়।
মিড ডে মিলের বরাদ্দর হিসাব
কয়েক মাস আগে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ জানিয়েছেন যে, মিড-ডে মিল বাবদ ১২৪৬৭.৩৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে এই প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল ১২৬৮০.৯৭ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪-এ প্রথমে ১১৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও পরে তা কমিয়ে ১০,০০০ কোটি করা হয়। বর্তমানে প্রাথমিকে মাথাপিছু বরাদ্দ করা হয়েছে ৫.৪৫ টাকা এবং উচ্চ প্রাথমিকে মাথাপিছু বরাদ্দ করা হয়েছে ৮.১৭ টাকা। তবে এক্ষেত্রে স্কুল কর্তৃপক্ষ চাইছে প্রাথমিকে ন্যূনতম ১০ টাকা এবং উচ্চ প্রাথমিকে ১৫ টাকা করা হোক বরাদ্দ।
কী বলছে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক?
বাঙুর ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “ সপ্তাহে দু’দিন করে ডিম। একটি ডিমের দামই সাত টাকা। সেখানে বরাদ্দ মাত্র ৮ টাকা। মিড ডে মিলে ভাল খাবার দিতে গেলে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা তাই অত্যন্ত জরুরি। তা না হলে পুষ্টিকর, ভাল খাবার ছাত্র-ছাত্রীদের আর দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।” বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “ স্কুলে মিড-ডে মিল খায় সাধারণত গরিব, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে মেয়েরা। সমাজের এই অংশের মানুষকে কেন্দ্রীয় সরকার কী চোখে দেখে, তা এই ভূমিকা থেকেই স্পষ্ট। হাজার হাজার কোটি টাকা অপচয় করছে অথচ মিড-ডে মিলে কিছু অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করছে না।”