প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিগত, বেশ কয়েকদিন ধরে ডুয়ার্স এলাকার স্থানীয়রা অভিযোগ করে আসছে যে গজলডোবায় তিস্তা ব্যারেজের সেতুর (Teesta Barrage Bridge) উপর যে রাস্তা রয়েছে, তার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। দিন-রাত ভারী ডাম্পার চলার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যারেজের ওই রাস্তাটি। একাধিক জায়গায় পিচ উঠে বেরিয়ে পড়েছে রড। এদিকে এই রাস্তার উপর দিয়েই নিত্যদিন যাতায়াত করে অসংখ্য যাত্রী। ফলে দিনের পর দিন দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছিল। তাই এবার ওই রাস্তা সংস্কারের দিকে নজর দিয়েছে সরকার। এই সেতুর রাস্তা পুনর্নির্মাণ করতে ১ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকা খরচ হবে সরকারের। কিন্তু এই সংস্কারের মধ্যেও বড় বিপদের মুখে পড়েছে সেখানকার বাসিন্দারা। কারণ এই কাজ করার জন্য দীর্ঘ পাঁচ মাস বন্ধ থাকবে এই সেতু।
১৪০ দিন টানা বন্ধ থাকবে সেতু!
উত্তরবঙ্গের সড়ক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হল তিস্তা ব্যারাজ সেতু। গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার, জলপাইগুড়ি জেলাশাসকের দপ্তরে উচ্চপর্যায়ে বৈঠকের সমাবেশ ঘটে। এ দিন বৈঠকে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সেচ দফতরের তিস্তা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষের নির্বাহী আধিকারিক–সহ অন্য আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই রাস্তা সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঠিক করা হয় আগামী ২৭ এপ্রিল থেকে ১৪০ দিনের জন্যে এই সেতু বন্ধ থাকছে। আর তাতেই মাথায় বজ্রাঘাত পরে সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের। কারণ উত্তরবঙ্গের এই তিস্তা ব্যারেজ রুটটি ডুয়ার্সের সঙ্গে শিলিগুড়ির যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করেছে। সংস্কারের নামে যদি এই রুট বন্ধ থাকে তাহলে অনেকের ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।
ব্যাপক ক্ষতি পর্যটন শিল্পে!
আসলে ডুয়ার্সের সঙ্গে শিলিগুড়ি যাতায়াতের জন্য তিস্তা ব্যারেজ ছাড়াও রয়েছে সেবকের পাহাড়ি পথ। কিন্তু সেই পাহাড়ি পথ ধরে যাওয়া মনে নিজেদের প্রাণ হাতে নিয়ে যাওয়া। কারণ বর্ষাকালে সেবকের পথ খুবই বিপদজনক অবস্থায় পরিণত হয়। মাটি আলগা হয়ে যেকোনো সময়ে ধস নেমে এই পাহাড়ি পথ বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে এই সিদ্ধান্তে বেশ অখুশি সকলে। এমনকি পর্যটন শিল্পেও ব্যাপক ক্ষতি হবে। অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড টুরিজম এর ক্রস বর্ডার কর্মকর্তা তন্নিষ্ঠা রক্ষিত এই বিষয়ে বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তে আমরা বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব। গাড়ি ভাড়া বহু গুণ বেড়ে যাবে। পর্যটকদের ভোগান্তি মারাত্মক ভাবে বৃদ্ধি পাবে।’
বন্ধ ভারী যানচলাচল
তবে এই ব্যাপারে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, সেচ দপ্তরের তরফে আগেই সেতু সংস্কারের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে ঠিকাদার সংস্থাকে কাজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ঠিকাদার সংস্থা কাজ করতে সেতু বন্ধের আবেদন করেছিল। তাই এবার সেতু বন্ধ করা হচ্ছে। রাজ্যের সেচ দপ্তরের মুখ্য বাস্তুকার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, ‘সেতু বন্ধের বিষয়ে এখনও লিখিত নির্দেশিকা আসেনি, তবে সেতু সংস্কারের বিষয়ে আমরা আগে থেকেই উদ্যোগী হয়েছি।’ গত বছর রাজ্যের মুখ্যসচিব পরিদর্শন করার পরেই সেতুর দু’পাশ দিয়ে যাওয়া ভারী যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরফলে অতিরিক্ত পথ অতিক্রম করে শিলিগুড়ি যেতে হয়।
আরও পড়ুনঃ আরও মসৃণ পাহাড়ে যাওয়া, উত্তরবঙ্গে তৈরি হবে নতুন সেতু, রাজ্যকে প্রস্তাব NHAI-র
অন্যদিকে সেতুর সংস্কারের দাবিতে গত সোমবার থেকে গজলডোবা এলাকায় আমরণ অনশন মঞ্চ বানিয়ে স্থানীয় ট্রাক মালিকরা অনশনে বসেছিলেন। এদিকে সেতু সংস্কার হবে জেনে খুশি হলেও দীর্ঘদিন সেতু বন্ধ থাকবে, ভেবে বেশ চিন্তায় পড়েছেন তাঁরাও। তার উপর জুন থেকেই উত্তরবঙ্গে বর্ষা শুরু হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে বর্ষার মুখে ওই কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত ঘিরে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |