সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: খিদিরপুরবাসীর স্বপ্নের মেট্রো স্টেশন (Kolkata Metro) কি অধরা থেকে যাবে? হ্যাঁ, পার্পল লাইন মেট্রো প্রকল্পের প্রস্তাবিত খিদিরপুর স্টেশন এবার বাদ পড়ার মুখোমুখি! কিন্তু কেন? আসলে আলিপুর বডিগার্ড লাইনস এলাকার কলকাতা পুলিশ চত্বরে স্টেশন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ এখনো সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার পি উদয় কুমার রেড্ডি এক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, খিদিরপুর এবং তার আশেপাশের এলাকার মানুষজনরা এই আধুনিক, দ্রুত এবং সুরক্ষিত মেট্রো পরিষেবা থেকে হয়তো বঞ্চিত হতে পারেন।
জমির জট নিয়ে শুরু হচ্ছে ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা
রাজ্য সরকারের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বিষয়টি এখনো পর্যন্ত আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। 9 মে প্রজেক্ট মনিটরিং গ্রুপ রাজ্যের মুখ্যসচিব সহ সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে একটি বৈঠক সারেন। আর উক্ত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মেট্রো প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সংস্থা RVNL-র বিভিন্ন প্রতিনিধিরা।
সূত্রের খবর, জমি সংক্রান্ত অনুমোদন নীতিগত স্তরে আটকে রয়েছে। এমনকি ব্যবহারকারী সংস্থাগুলি চাইলে রেলমন্ত্রকের সঙ্গে সম্পর্ক করে খিদিরপুর স্টেশনকে বাদ দিয়েই পার্পল লাইন নির্মাণ করতে পারে।
দরকার ছিল খিদিরপুর স্টেশনের?
তবে রেলের সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, খিদিরপুর স্টেশনের জন্য 837 বর্গমিটার মতো জায়গা প্রয়োজন। তবে তা কলকাতার সশস্ত্র পুলিশের বডিগার্ড লাইনের আওতায় পড়ছে। আর এই এলাকা ব্যবহার করা হতো স্টেশনের ভেন্টিলেশন শ্যাফট, প্রবেশ-প্রস্থান পথ নির্মাণের জন্য। এমনকি সংস্থাটি এও প্রস্তাব দিয়েছিল, যে সমস্ত বাড়ি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছ, সেগুলো তারা নতুন করে নির্মাণ করে দেবে।
RITES-র সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট অনুযায়ী, 2035 সালের মধ্যে দৈনিক গড়ে 44 হাজারের বেশি মানুষ খিদিরপুর স্টেশনকে ব্যবহার করত। হ্যাঁ, এমনটাই অনুমান ছিল। কারণ মেটিয়াবুরুজ, গার্ডেনরিচ, খিদিরপুর সহ দক্ষিণ-পশ্চিম কলকাতার একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠী এই পরিষেবার সুবিধা প্রত্যক্ষভাবে উপভোগ করতে পারতো। কিন্তু সেই রাস্তায় কার্যত তালা পড়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ শিয়ালদহ ও হাওড়া ডিভিশনের ১৩টি ট্রেনের সময়সূচিতে বদল! বিজ্ঞপ্তি জারি পূর্ব রেলের
বর্তমানে জোকা থেকে মাঝেরহাট পর্যন্ত 8 কিলোমিটার দীর্ঘ উঁচু স্তরে মেট্রো চালু হয়েছে। আর এই রুটের পরবর্তী স্টেশন মমিনপুর, যা শেষ উঁচু স্তরের স্টেশন। তবে খিদিরপুর হওয়ার কথা ছিল প্রথম ভূগর্ভস্থ মেট্রো স্টেশন। কিন্তু জমি নিয়ে এই তালবাহানার জেরে মমিনপুরের পর হয়তো ট্রেন সরাসরি ভিক্টোরিয়া স্টেশনে গিয়ে থামবে।
আর এর জেরে মমিনপুর থেকে ভিক্টোরিয়া পর্যন্ত প্রায় 3.2 কিলোমিটার দূরত্ব হয়ে যাবে, যা কিনা আদর্শ মেট্রো স্টেশনের 700 মিটার থেকে 1 কিলোমিটার দূরত্বের তুলনায় অনেকটাই বেশি। এখন দেখার, ভবিষ্যতে কোন সিদ্ধান্তের পথে হাঁটে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ।