প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে মুর্শিদাবাদে (Murshidabad Waqf Violence) একেবারে ভয়াবহ হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে। আর সেই হিংসার আঁচে একের পর এক এলাকা অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছিল। একের পর এক পুলিশের গাড়িতে ধরানো হচ্ছে আগুন। এমনকি সেখানকার স্থানীয়দের ঘরবাড়ি, দোকানপাটেও আগুন ধরানো হচ্ছে। নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন ঝাড়খণ্ডে। কেউ আবার চলে গিয়েছেন মালদায়। আর এই আবহে অভিযোগ উঠছে যে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার জেরেই হিংসা ভয়ঙ্কর আকার নিচ্ছে। তাই এবার সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে রাজ্যে আসছে কমিশনের প্রতিনিধি দল।
রাজ্যে আসছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
সূত্রের খবর, রাজ্যে আসছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। মূলত মুর্শিদাবাদে সংশোধিত ওয়াকফ আইন বিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে হিংসা এবং মৃত্যুর ঘটনা খতিয়ে দেখতে পাঠানো হচ্ছে এই কমিশনকে। এছাড়াও গত শুক্রবারের ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার যে অভিযোগ উঠেছিল সেই বিষয়েও পদক্ষেপ করতে চলেছে কমিশন। জানা গিয়েছে ওড়িশার “প্রকাশ কলিঙ্গ রাইটস্ ফোরাম” নামে একটি মানবাধিকার সংগঠনের তরফে একটা অভিযোগ জমা পড়েছিল কমিশনের কাছে। তারপরেই নড়েচড়ে বসে কমিশন। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই মুর্শিদাবাদে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আসার কথা জানিয়েছে। মনে করা হচ্ছে শীঘ্রই আসবে তাদের টিম।
চিঠিতে কী জানানো হয়েছে?
এদিকে তদন্তের বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ব্রিজবীর সিংহ গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার ওড়িশার সেই মানবাধিকার সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেলকে চিঠি লিখে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। সেই চিঠিতে জানানো হয়েছে যে, “ কমিশনের সদস্য প্রিয়ঙ্ক কানুনগোর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ১৯৯৩ সালের মানবাধিকার সুরক্ষা আইন এর ১২ নম্বর ধারা অনুসরণ করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি অভিযোগের তদন্ত হবে। শুধু তাই নয় মুর্শিদাবাদে এই হিংসার ঘটনায় মোট তিন জনের মৃত্যু সহ এলাকায় স্থানীয়দের বাড়িঘর, দোকান ও যানবাহনে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ কারণে ঘরছাড়া হওয়ার ঘটনা নিয়েও চালানো হবে তদন্ত।”
আরও পড়ুনঃ নিজের PF নম্বর ভুলে গেছেন? এই সহজ পদ্ধতির মাধ্যমে খুঁজে বের করুন
কমিশনের তরফে জানা গিয়েছে, তাঁদের প্রতিনিধি দল মুর্শিদাবাদ জেলার সংশ্লিষ্ট এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদ এবং হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ নথিভুক্ত করবে। এছাড়াও গত শুক্রবারের পর অনেক পরিবার প্রাণ বাঁচানোর জন্য সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ান, সুতি এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের একাংশ গঙ্গা পার করে মালদহের কালিয়াচক-৩ এবং বৈষ্ণবনগরে অস্থায়ী শিবিরে যে আশ্রয় নিয়েছিলেন সেখানেও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিরা যেতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, এই সপ্তাহের মধ্যেই প্রতিনিধি দল চলে আসতে পারে।