সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ফের ভাসতে চলেছে পড়শি দেশ! ভোরের আলো তখনো ফোটেনি। দক্ষিণ দিনাজপুরের ঘুমন্ত শহর বালুরঘাটে (Balurghat) আচমকায় শোরগোল পড়ে গেল, আত্রাই নদীর উপর তৈরি হওয়া কংক্রিটের বাঁধ হরমুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে। জানা যাচ্ছে, প্রায় 40 ফুট জায়গা ধরে এই ভাঙ্গন। আর এই আতঙ্কে কেঁপে উঠেছে নদীর দুই পাড়ের মানুষজন।
তবে সবথেকে চমক এখানেই যে, নদীটি যেমন ভারতের বুক দিয়ে প্রবাহিত, তেমনই নদীর ওপার গিয়ে মিশেছে ইউনূসের দেশের জনজীবনে। তাই এই বাঁধ ভাঙন যে শুধুমাত্র ভারতের নাগরিকদের সমস্যা তা নয়, বাংলাদেশও আনতে পারে বিরাট প্রভাব।
বর্ষা ছাড়াও বিপাকে পড়ল দুই দেশ
প্রসঙ্গত এবছর এখনও বর্ষার মুখ দেখেনি বঙ্গবাসী। এমনকি ভারী বৃষ্টি বা নদীর জলস্ফীতিও তেমন বাড়েনি। তাহলে কীভাবে ঘটল এই ভাঙ্গন? সূত্রের খবর, 2022 সালে বালুরঘাটের চকভৃগু এলাকায় শুরু হয়েছিল এই বাঁধ নির্মাণের কাজ। 2024-এ যথারীতি কাজ শেষ হয়। তবে 2025 সালের ফেব্রুয়ারিতেই আবার গার্ডওয়ালে ধস নামে। আর তখন অস্থায়ীভাবে বালির বস্তা ফেলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়েছিল। তবে গতকাল 20 মে ভোরবেলা আবারও ধ্বসে 40 ফুট এলাকা গুঁড়িয়ে যায়।
বাংলাদেশে কী প্রভাব পড়তে পারে?
বলে রাখা ভালো, এই আত্রাই নদী ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর হয়ে প্রবেশ করেছে পড়শি দেশে। ফলে বাঁধ ভাঙ্গার প্রভাবে যে বাংলাদেশের নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছে, এর ফলে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত ঘেঁষে বাংলাদেশ অঞ্চলের চাষের জমি ভেসে যেতে পারে। ফলে নদী তীরবর্তী বসতি, কৃষিজমি এবং সাধারণ জীবনযাত্রায় আসতে পারে বিরাট প্রভাব।
আরও পড়ুনঃ ৭০ বছরের সম্পর্কের অবসান! এই রুটে বন্ধ হচ্ছে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট, দুঃসংবাদ বাঙালিদের জন্য
শুরু হলো রাজনৈতিক জলঘোলা
তবে এই ঘটনার পরেই এলাকা পরিদর্শনে পৌঁছন বালুরঘাটের সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডক্টর সুকান্ত মজুমদার। তিনি জানান, মাস কয়েক আগে আকস্মিকভাবে ভেঙে পড়েছিল এই সেতু। আর এবার আত্রাই নদীর উপর কংক্রিটের বাঁধও জলের স্রোতে ভেঙে গেল। রাজ্যের উন্নয়নের বন্যা বইয়ে দেওয়ার চেষ্টা যে বাস্তবে কতটা দুর্বল, তা হাতেনাতে টের পাচ্ছে রাজ্যবাসী।
অন্যদিকে বালুরঘাট পৌরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা অশোক মিত্র দাবি করেছেন, নদীর জল বাড়বে কি কমবে, সেটা রাজনীতিবিদদের ভাবার বিষয় নয়। এটি প্রাকৃতিক ঘটনা। বিজেপি দুর্নীতির অভিযোগ তুলেই আমাদের বিরুদ্ধে রাজনীতিতে নামছে। আগে নিজেদের দিকে তাকান, রেলস্টেশন নির্মাণে তো নামগন্ধ নেই।