সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ চাকরি তো হাতছাড়া হয়েইছেই, এবার গোঁদের ওপর বিষফোঁড়ার সমান হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যাঙ্কের থেকে আসা বারবার ফোন। লোন মেটানোর জন্য বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ বহু শিক্ষকের। এমনিতেই তো চাকরি হারিয়ে সকলে সর্বশান্ত, বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এহেন পরিস্থিতিতে এবার নতুন বিপদ যেন সকলের ঘাড়ে উঠতে নাচতে শুরু করেছে।
ব্যাঙ্ক থেকে ফোন আসছে চাকরিহারাদের কাছে
সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ করা প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর নিয়োগ বাতিল করেছে। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরগরম বাংলা তথা সমগ্র দেশ। এরকম চলতে থাকলে বাংলায় শিক্ষার মান কোথায় গিয়ে ঠেকবে? পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎই বা কতটা সুরক্ষিত? এখন সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন অনেকে। উদ্বিগ্ন স্কুল পড়ুয়াদের অভিভাবকরাও। এদিকে চাকরি হারিয়ে মাথায় হাত পড়েছে প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষক থেকে শুরু করে শিক্ষা কর্মীদের। সকলেরই সংসার আছে, ব্যাঙ্কের লোনের চাপ আছে, ইএমআই ভরতে হবে, কারোর ওষুধ কিনতে হবে, ছেলে মেয়ের পড়াশোনা চালানোর চাপ আছে। কিন্তু এখন হাজার হাজার শিক্ষকের চাকরি নেই। উপরন্ত দেশের শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে ১২ শতাংশ সুদে বেতন ফেরত দিতে হবে।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার চাকরি হারাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে। অন্যদিকে স্কুলে স্কুলে রীতিমতো হাহাকার দেখা দিয়েছে। কারণ সেখানে ব্যাপকভাবে শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাব লক্ষ্য করা হচ্ছে। এছাড়া স্কুলের প্রিয় শিক্ষক-শিক্ষিকাকে হারিয়ে চোখে জল অনেক পড়ুয়ার। তবে এখন আবার শিক্ষকদের যেন তাড়া করে বেড়াচ্ছে ব্যাঙ্কের থেকে আসা ঘন ঘন ফোন। সবথেকে বড় চিন্তা, লোনের টাকা কীভাবে মেটানো হবে? এখন সেই চিন্তা সকলকে রীতিমতো কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ নিজের সেরাটা দিতে পারেননি! আর থাকবেন না মোহনবাগানে? মোলিনার কথায় জল্পনা
উদ্বিগ্ন চাকরিহারা শিক্ষক শিক্ষিকারা
শিক্ষকদের অভিযোগ, রোজ ফোন করে কার্যত তাগাদা দিচ্ছে ব্যাঙ্ককর্মীরা। এই প্রসঙ্গে রীতিমতো হাহাকার শোনা গেল জলপাইগুড়ি যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের সদস্য সেলিনা আক্তারের। তিনি বলেন, ‘যোগ্যদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে কিছু করতেই হবে। আমরা সেই আশায় রয়েছি।’ এখন দেখার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা রাজ্য সরকার এই বিষয়েও শিক্ষকদের পাশে দাঁড়ায় কিনা সেদিকে।