সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বাংলায় আজ থেকে শুরু হয়েছে এসআইআরের (West Bengal SIR) কাজ। তবে সেই বিতর্কের মাঝেই এবার বাঁকুড়ায় একাধিক ভুয়ো ভোটারের খোঁজ মিলল। গোটা গ্রামের সমস্ত নাগরিক হিন্দু হওয়া সত্ত্বেও তালিকায় এল একের পর এক মুসলিম ভোটারের নাম। আর সেই তালিকা সামনে আসতেই রাজ্য সরকারকে কার্যত কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সুভাষ সরকার।
ঘটনাটি কী?
আসলে গতকাল নির্বাচন কমিশন বাংলায় এসআইআর শুরু করার বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। সে মতোই রাজ্যের ভুয়ো নাগরিকদের চিহ্নিত করে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। আর এরই মধ্যে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠে আসলো বাঁকুড়ার ১ নম্বর ব্লকের শ্যামপুর গ্রামে। জানা যাচ্ছে, ওই গ্রামের ২৮৫ নম্বর বুথে মোট ১০৪৬ জন ভোটার। তবে ভোটার তালিকায় নিজেদের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করতে গিয়ে স্থানীয় আধিকারিকরা দেখে যে, ওই তালিকায় একের পর এক সংখ্যালঘু ভোটারের নাম রয়েছে। এমনকি সবাই মুসলিম।
মোদ্দা কথা, ওই গ্রামে আবালবৃদ্ধাবনিতা সবই হিন্দু। কোনও মুসলিম জনজাতি নেই, এমনকি কোনও সময় মুসলিমরা ওখানে বসবাস করেনি। সবথেকে বড় ব্যাপার, ওই ভোটার তালিকায় থাকা সেই সব নামের ব্যক্তিদেরকে ওই গ্রামের কেউ চেনেই না। কিন্তু কীভাবে তারা ওই তালিকায় ঢুকে পড়ল তা নিয়েই শুরু হচ্ছে সংশয়। আর এ নিয়েই রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন বিজেপি নেতা সুভাষ সরকার। তবে পাল্টা বিজেপিকে এক হাত নিয়ে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে তোপ দেগেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
উদ্ভট নাম সব ভোটার তালিকায়
ভোটার তালিকা খুলতেই দেখা যায়, ওই তালিকায় ৬ নম্বরে রয়েছে সুয়েরাবানু খাতুনের নাম, ৩২২ নম্বর হয়েছে রিপন মল্লিকের নাম, ৩২৩ নম্বরে মোস্তফা খাতুন এবং ৪৮৫ নম্বরে আকলিন মুস্তাক মিদ্যার নাম। পাশাপাশি তাদের নামের পাশে রয়েছে বাবার নাম, বাড়ির নম্বর, বয়স, ছবি, ভোটার কার্ডের নম্বর সহ বিস্তারিত তথ্য। আর প্রত্যেকেরই মোটামুটি ২২ থেকে ২৩ বছরের মধ্যে বয়স।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের মূল্য চোকাতে হল মহিলাকে! উত্তপ্ত কোচবিহার
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছে, শ্যামপুর গ্রাম তো দূরের কথা, আশেপাশের কোনও গ্রামেও এই নামে যে কেউ আছে তা শুনিনি। কোনও সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় এখানে বসবাসই করে না। আজও তা নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও এদের নাম কীভাবে ভোটার তালিকায় ঢুকল, সে নিয়ে সন্দিহান স্থানীয়রা। কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার দাবি করছেন, ইচ্ছাকৃতভাবেই এই ধরনের ভুয়ো ভোটারদের নাম তালিকায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এসআইআর চলাকালীন বিএলওদের এই তথ্য দিয়েই নামগুলো তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে।












