কলকাতাঃ আরজি কর মেডিকেল কলেজে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় প্রতিবাদের রেশ দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন আরও বেশি মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছেন। সবাই বিচার চাইছেন নির্যাতিতা তরুণীর জন্য। এর মধ্যে গত ১৪ ই আগস্ট মধ্যরাতে রাত দখলের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় গোটা দেশে। ২০০-র বেশি জায়গায় সেদিন রাতে বিক্ষোভ দেখান মহিলারা। পুরুষদেরও এদিন প্রতিবাদ করতে দেখা গিয়েছে জায়গায় জায়গায়। অনেকেই মনে করছেন যে, দিন দিন গণ বিক্ষোভের রূপ নিচ্ছে এই আন্দোলন।
তবে কোনও কোনও তৃণমূল নেতা এটিকে গণ আন্দোলন হিসেবে মানতে নারাজ। তাঁদের মতে, বেশ কয়েকটি কারণে এই আন্দোলনের রেশ বেড়ে গিয়েছে দিনের পর দিন। বেশ কয়েকটি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত বিষয়টিকে আরও বেশি জটিল করে তুলেছে বলে মতামত দিয়েছেন নেতারা। গোপনে এই অরাজনৈতিক আন্দোলনে সিপিএম ও বিজেপি মদত দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা। এই প্রতিবেদনে আমরা তিনি এমন প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করবো, যা এই আন্দোলনকে আরো বেশি ইন্ধন যুগিয়েছে।
(১) আরজি করের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বদলি
নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটে ৯ ই আগস্ট গভীর রাতে। তারপর ধিকিধিকি আন্দোলনের আগুন জ্বলে ওঠে। মেডিকেল কলেজের পড়ুয়াদের মধ্যেই ততদিন আন্দোলন সীমাবদ্ধ ছিল। তবে তারপর আরজি কর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ইস্তফা আসে। এর কিছুক্ষণ পরেই তাকে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যালের অধ্যক্ষ হিসেবে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়। তৃণমূল নেতাদের মতে এই সিদ্ধান্ত আন্দোলনের আগুনে প্রথমবারের জন্য ঘি ঢেলে দিয়েছিল।
(২) সেমিনার হলের পাশের দেওয়াল ভাঙা
গত ১০ ই আগস্ট এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসে। এরপর সন্দীপ ঘোষের ইস্তফা ও বদলি হয়। ততদিনে আন্দোলন শুরু হয়ে গিয়েছে হাসপাতালের বাইরে। কিন্তু ১৩ ই আগস্ট এই আন্দোলনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় যখন সেমিনার হলের পাশের একটি দেওয়াল ভেঙে ফেলে পূর্ত দফতর। তৃণমূল নেতাদের কথায়, এই সময়ে এই ঘটনা প্রমান লোপাটের তত্বকে জোরালো করে। তার ফলেই ১৪ ই আগস্ট রাত দখলের কর্মসূচি নেওয়া হয়।
(৩) ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ‘ডার্বি’ ম্যাচ বাতিল
আর গত শনিবার ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের ডুরান্ড কাপের ম্যাচটি বাতিল হয়ে যাওয়ার কারণে কলকাতার রাস্তায় বিক্ষোভ মাত্রা ছড়িয়ে যায় রবিবার। প্রশাসনের মতে, এই ম্যাচটি নিরাপত্তার বিষয়টি পর্যালোচনা করেই বাতিল করা হয়েছিল। তবে এই সিদ্ধান্তে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে ধামাচাপা দেওয়ার একটা তত্ত্ব চাউর হয়। এছাড়াও রবিবার আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জ এতে আরও মাত্রা যোগ করে। এর ফলেই এই আন্দোলন চরম আকার ধারণ করে।