প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: পালিয়ে বেড়াচ্ছিল একের পর এক জায়গায়। তাকে ধরতে রীতিমত কালঘাম ছুটছিল বন দফতরের কর্মীদের। অবশেষে বাঘবন্দি খেলা শেষ। কাবু করা হয়েছে বাঘিনী জিনাতকে। গত শনিবার পর পর তিনটি ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়েছিল বাঘিনী জিনাতকে লক্ষ্য করে। কিন্তু গুলি লাগলেও একটুও কাবু করা যায়নি তাকে। শেষে গত রবিবার ঘুমপাড়ানি গুলিতে দুপুরে ধরা দেয় জিনাত। বাঁকুড়ার গোসাইডিহিতে সাত দিন পর বন দফতরের ছোড়া ঘুমপাড়ানি গুলিতে বাগে আসে বাঘিনী। কিন্তু তারপর থেকে জিনাতের যেন মেজাজের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে।
অবশেষে বাগে আনা গেল জিনাতকে
অনেকদিন ধরেই বাইরে বাইরে ঘুরে বেরিয়েছিল জিনাত। আর তাতে স্বাভাবিকভাবে তার শারীরিক সুস্থতা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। তবে পশু চিকিৎসকরা জিনাতের শরীর পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছে যে শরীরে কোনো জায়গায় আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। অবাক করা বিষয় হলেও বন দফতরের কর্মীদের কাছে এটা বেশ স্বস্তি। কিন্তু মেজাজে তার এসেছে অনেক পরিবর্তন। বিশেষ করে খাওয়া দাওয়া নিয়ে। কারণ এই ৭ দিনে জিনাত চারিদিকে ঘুরে বেরিয়ে অসংখ্য ছাগল মুরগি বা শুয়োরের মাংস খেয়েছে। রসিয়ে খেয়েছে অনেক মাংস। কিন্তু মাংসের স্বাদ এতটাই বেশি হয়ে গিয়েছে যে বন্দি দশায় এখন আর হাসপাতালের মাংস ছুঁয়ে খেতে চাইছে না জিনাত। শুধুমাত্র জল এবং দুধ অর্থাৎ লিকুইড খাবার গ্রহণ করছে জিনাত।
হচ্ছে জিনগত পরিবর্তন
জিনাতের এই হেন আচরণ এবং পরিবর্তন চোখে পড়েছে সকলের। আশঙ্কা করা হয়েছে এর পিছনে অন্যতম কারণ হল ট্রানকুলাইজারের প্রভাব। আসলে জিনাতকে বাগে আনার জন্য গত শনি এবং রবিবার, বন দফতরের কর্মীরা প্রথমদিন ৩ টে এবং পরের দিন ১ টা ট্রানকুলাইজার ছোঁড়ার ফলে থেকে গিয়েছে ওষুধের প্রভাব। এর আগেও নাকি ওড়িশার কোনও এলাকায় খাঁচায় বন্দী হয়েছিল জিনাত। আসলে জিনাতের উপসর্গ দেখে ও বুঝে বিশেষজ্ঞরা এমনই অনুমান করছেন। হচ্ছে জিনগত পরিবর্তন ঘটছে। এর পাশাপাশি শারীরিক পরিবর্তনও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শরীরে বাড়ছে কালো দাগ।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন জঙ্গল থেকে ছাড়ার পর জিনাত খাঁচায় বন্ধ অবস্থায় মন মরা হয়ে আছে। অবশ্য সেটাই এখন স্বাভাবিক। তবে এই অবস্থা খুব সাময়িক। ওষুধের প্রভাব এখনও থাকায় জিনাতের তাই মাংসের প্রতি একটি বিরক্তি ভাব এসে গিয়েছে। তাই সে এইমুহুর্তে নাকি ওআরএস, দুধ খেয়ে আছে। মাংসে মুখ দিচ্ছে না।