প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: আবাস যোজনার (Awas Yojana Scheme) উপভোক্তাদের তালিকা নিয়ে কয়েক মাস যাবৎ নানা ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে প্রশাসনকে। রীতিমত স্থানীয় বাসিন্দাদের হুমকি পর্যন্ত সহ্য করতে হয়েছে সমীক্ষকদের। আর এই আবহে এবার আবাস যোজনার সমীক্ষা নিয়ে শাসকদলের মধ্যেই গোষ্ঠীকোন্দল বাঁধল। দুই দলের মধ্যে চলে তুমুল মারামারি। যার প্রেক্ষিতে তৃণমূলের এক দল লোক তালা ঝোলালেন পঞ্চায়েত কার্যালয়ে।
ঘটনাটি কী?
সূত্রের খবর, আবাস যোজনার সমীক্ষা করার সময় গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার কোচবিহারের গীতালদহ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে তুমুল ঝামেলা বেঁধে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে অভিযোগ ওঠে, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান এবং অঞ্চল সভাপতি মিলে ১৫ টি বুথের মধ্যে মাত্র ৪টি বুথের বাসিন্দাদের নাম আবাসের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। বাদ পড়ে গিয়েছে আরও ১১টি বুথের বাসিন্দারা। আর এই খবর চাউর হতেই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে গোটা এলাকা জুড়ে। আর এই গোলযোগের মাঝে কয়েক জন গিয়ে পঞ্চায়েত অফিসে হামলা করে। অনেকেই কার্যালয়ের মূল দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন। তারপরেই দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে চলে আসেন তৃণমূল কংগ্রেসের গিতালদহ ১ নম্বর অঞ্চল সভাপতি আসাদুল হক। সঙ্গে আসে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ তাঁর সমর্থকরা।
স্থানীয়দের মারধরের অভিযোগ
এদিকে আবাস যোজনার এই পক্ষপাতিত্বের সমস্যা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য আবদুল ওলিন। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ, অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আসাদুল হক তাঁর লোকজন নিয়ে এসে মারধর করেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। কিন্তু সেই সমস্ত অভিযোগ মানতে নারাজ পঞ্চায়েত সদস্য আসাদুল হক। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘আমি পঞ্চায়েত কার্যালয়ে গিয়েছিলাম তালা ঝোলানোর জন্য। কারণ, অনেকে এসে পঞ্চায়েত অফিসে হামলা করছিল। আমরা কাউকে মারিনি উল্টে আমাদের মারধর করা হচ্ছিল।’’ তারপর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে চাপানউতোর।
আরও পড়ুনঃ প্রাণ বাঁচাতে চাকরি ছাড়ছেন হাজার হাজার পাকিস্তানি সেনা! এক সপ্তাহে ২৫০০ জনের পদত্যাগ
এদিকে আবাস যোজনার বাড়ি নির্মাণের জন্য প্রায় ১২ লক্ষ গ্রাহকের বাড়ি তৈরির টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। গত বছর ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে টাকা দেওয়ার কাজ, সরকারি গাইডলাইন অনুযায়ী, আবাসের ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার মধ্যে প্রথম কিস্তিতে দেওয়া হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। সেটা সরাসরি চলে গিয়েছে সুবিধে প্রাপকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। বলা হয়েছে বাড়ির কাজ কিছুটা এগোলে সরকারি কর্মীরা পরিদর্শন করবেন। এবং সব ঠিকঠাক থাকলে সুবিধা প্রাপকের অ্যাকাউন্টে দ্বিতীয় কিস্তির ৪০ হাজার টাকা ট্রান্সফার করা হবে। এবং বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হলে তিনি পাবেন শেষ কিস্তির ২০ হাজার টাকা।