কোচবিহারঃ আরজি কর-কাণ্ড এবং লক্ষ্মীর ভান্ডার যেন বর্তমান সময় একে ওপরের পরিপূরক হয়ে উঠেছে। এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন কীভাবে? এখন আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ডিউটিরত মহিলা চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণকাণ্ডের ঘটনায় অশান্ত হয়ে রয়েছে বাংলা। শুধু বাংলা বললে ভুল হবে, এই বিক্ষোভের আঁচ সমগ্র দেশ, বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে অনেকেই রয়েছেন আবার লক্ষ্মীর ভান্ডার বয়কটের দাবি তুলেছেন।
লক্ষ্মীর ভান্ডার বয়কটের ডাক
আরজি কর-এর ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকে বাংলার সাধারণ মানুষের রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসতে শুরু করেছেন। জায়গায় জায়গায় চলছে বিক্ষোভ। শুধু তাই নয়, এবার নির্যাতিতার বাবা ও মা-ও বিক্ষোভে শামিল হতে চলেছেন। অন্যদিকে এই ঘটনায় বহু মানুষ রাজ্য সরকারের জনদরদী প্রকল্প লক্ষ্মীর ভান্ডার বয়কটের দাবি তুলেছেন। সিংহভাগ মানুষ বলছেন, বাংলার লক্ষ্মীরা যেখানে সুরক্ষিত নন সেখানে এই লক্ষ্মীর ভান্ডার হাস্যকর। এবার এই ঘটনা নিয়েই প্রকাশ্যে এল শাসক নেতার হুমকি। তিনি জানালেন, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রচারে নামলে বন্ধ করে দেওয়া হবে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রচারে নামলে বন্ধ হবে লক্ষ্মীর ভান্ডার
লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ করা নিয়ে হুমকি দিয়ে শিরোনামে উঠে এসেছেন কোচবিহারের শীতলকুচির তৃণমূল ব্লক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অশোককুমার রায়। আরজি কর কাণ্ডে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে কোচবিহারের শীতলকুচির গোঁসাইয়ের হাটে মিছিল করে তৃণমূল। এদিকে এই মিছিলের পর শাসক নেতা যা বললেন তা শুনে থ হয়ে গিয়েছেন সকলেই। অশোককুমার রায় বলেন, ‘লোকসভা ভোটের আগে বিরোধীরা বলেছিল, মোদী চাল না দিলে দিদি কোথা থেকে দেবে? ভোটের পরে তাদের খুঁজে বার করে রেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতেই তারা হাতে পায়ে ধরছে। এবার আরজি কর কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তারা আবার চক্রান্ত শুরু করেছে। এবার যারা চক্রান্ত করবে তাদের লক্ষ্মীর ভান্ডার, বার্ধক্য ভাতা, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী প্রকল্প সহ সমস্ত সরকারি সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
গর্জে উঠল বিজেপি
এদিকে শাসক নেতার এহেন মন্তব্যর পর গর্জে উঠেছে বিজেপি শিবির। বিজেপির শীতলকুচি বিধানসভার আহ্বায়ক কনকচন্দ্র বর্মন বলেন, ‘বিরোধী রাজনীতির সমর্থকদের রেশন বন্ধ করে দিয়ে তা আবার প্রকাশ্য জনসভায় বড় মুখ করে বলছেন তৃণমূল নেতা। ভেবে দেখুন পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্রের কী দশা। তৃণমূল যে প্রতিবাদের নামে নাটক করছে তা সাধারণ মানুষ বুঝে গিয়েছে। তাই গণরোখ রুখতে তারা হুমকি দেওয়া শুরু করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৈত্রিক টাকায় রাজ্য সরকার অনুদান দেয় না। অনুদান দেয় সাধারণ মানুষের করের টাকায়। তাই প্রকল্প বন্ধ করার কোনও অধিকার তৃণমূলের নেই। তৃণমূল নেতার এই মন্তব্যে স্পষ্ট সাধারণ মানুষের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গী কতটা নীচ। তৃণমূল এই কাজ করলে গণরোষ আরও বাড়বে।’