প্রীতি পোদ্দার, বোলপুর: এতদিন করোনা আবহের কারণে বন্ধ ছিল শান্তিনিকেতনের (Santiniketan) ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা। কিন্তু এবার মহাসমারোহে চার বছর পরে ফিরতে চলেছে এই পৌষমেলা। শান্তিনিকেতন ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ হওয়ার পরে এই প্রথম হচ্ছে মেলা। তাই বাড়তি উন্মাদনা রয়েছে সকলের মধ্যে৷ ইতিমধ্যেই মেলা নিয়ে চলছে জোরকদমে প্রস্তুতি। আর এই আবহেই প্রকাশ্যে এল মেলার দিনক্ষণের সময়সূচি। চলতি বছর তিন দিন নয়, মেলা হতে চলেছে টানা ৬ দিন।
অবশেষে পুরোনো ছন্দে ফিরতে চলেছে পৌষমেলা!
২০১৯ সালে শেষ বার ‘ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা’ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ২০২০ সালে কোভিড পরিস্থিতি জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিশ্বভারতীর তৎকালীন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর একাধিক মন্তব্য ও সিদ্ধান্তর জন্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে ক্রমেই। যার প্রভাব পড়ে মেলাতেও। এরপর গত বছর অর্থাৎ সাধারণ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট এই মেলার আয়োজন করে থাকে। তবে গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে পূর্বপল্লীর মাঠে পৌষমেলার আয়োজন করা হলেও তাতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের কোনও ভূমিকা ছিল না। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পূর্বপল্লীর মাঠে পৌষমেলার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সময় প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয় কুমার মল্লিককে। আর এবার সব দ্বন্দ্ব ভুলে সকলেই একত্র হয়ে পুরোনো ছন্দে ফিরিয়ে আনতে চলেছে এই পৌষমেলা।
গতকাল অর্থাৎ সোমবার পৌষমেলা নিয়ে এক বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেই বৈঠকে পৌরহিত্য করেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বিনয়কুমার সরেন। এদিন সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ, বোলপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পর্ণা ঘোষ, এসআরডিএ চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা–সহ অন্যান্য আধিকারিক। মেলায় বায়ো টয়লেট, পানীয় জল, ফায়ার ব্রিগেড, মাঠের স্বচ্ছতা, যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ সমেত একাধিক বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়। এবং বৈঠকে কর্তৃপক্ষকে সবরকমের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছে জেলা ও রাজ্য প্রশাসন।
পরিবেশ বান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা হবে এই মেলা!
জানা গিয়েছে, এ বছর ‘পরিবেশবান্ধব’ পৌষমেলা করতে উদ্যোগী হয়েছে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী। তাই পরিবেশ আদালতের নির্দেশিকা মেনে পৌষমেলা করার ব্যাপারে এ দিন সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পাশাপাশি, আর্থিক প্রতারণা বা তছরুপ যাতে না হয়, সে জন্য অনলাইনে পৌষমেলার স্টলের জন্য প্লট বুক করতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, এ দিনের বৈঠকে জল, বিদ্যুৎ, নিকাশি, নিরাপত্তার ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সহযোগিতা চাওয়া হয়। আর্থিক প্রতারণা বা তছরুপ যাতে না হয়, সে জন্য অনলাইনে পৌষমেলার স্টলের জন্য প্লট বুক করতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কী বলছেন কাজল শেখ?
জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ বলেন, “নিশ্চিত রূপে মেলার মাঠ বিশ্বভারতীর। তবে রাজ্য সরকারের এস আর ডি এ, পুরসভা, জেলা পুলিশ প্রশাসন। আইন শৃঙ্খলা থেকে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা সবটাই রাজ্যসরকারের এক্তিয়ারে। তাই রাজ্যসরকার ছাড়া মেলা আয়োজন করা সম্ভব নয়। মুখ্যমন্ত্রী চান, মেলা হোক। তাই রাজ্যসরকার সর্বতভাবে পৌষমেলার আয়োজনে সাহায্য করবে।” পাশপাশি মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, “এবার পৌষ উৎসব সফল করতে হবে। আগের চেয়েও ভালো করতে হবে।কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে সাহায্য চেয়েছেন। আমাদের তরফে প্রশাসনিকস্তরে সবরকমভাবে সহযোগিতার আশ্বাস বিশ্বভারতীকে দেওয়া হয়েছে।”
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |