প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ফের বেঞ্চ পরিবর্তনের দরুন স্তব্ধ হয়ে গেল রাজ্যের ১০০ দিনের কাজের মামলা (WB 100 Days Job Case)। অসংখ্য শ্রমিকের জীবিকা নিয়ে তৈরি হল আইনি অনিশ্চয়তা। জানা গিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম জনস্বার্থ মামলা ছেড়ে দেওয়ার পর এবার সৌমেন সেন ও বিচারপতি মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চও মঙ্গলবার এই মামলাটি শুনতে অস্বীকার করল। আর তাই নিয়েই এবার মামলা সংক্রান্ত একাধিক প্রশ্ন উঠে এল।
১০০ দিনের কাজের প্রকল্প নিয়ে মামলা
২০২১ সালের বিধানসভার পর থেকে রাজ্যে মহাত্মা গান্ধী রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি স্কিম বা ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়। কেন্দ্রীয় সরকারের অভিযোগ একটাই, আর সেটি হল দুর্নীতি। আর ঠিক পরপরেই ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এবং তদন্তের নিরিখে সরাসরি সিবিআই এর সাহায্যের আবেদন জানান। অন্য দিকে, জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেত মজদুর সংগঠন। একটাই দাবি তাঁদের, সেটি হল রাজ্য বনাম কেন্দ্রের দ্বন্দ্বের কারণে শ্রমিকেরা কেন কাজ পাচ্ছেন না।
রিপোর্টে উঠে আসে দুর্নীতির অঙ্ক
এরপরেই হাই কোর্টের নির্দেশে তৈরি হয় চার সদস্যের যাচাই কমিটি। এই কমিটি একজন নোডাল অফিসারের নেতৃত্বে গঠিত হয়, এছাড়াও সেই কমিটিতে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিরাও রয়েছেন। তাঁরা গত মাসে এই ১০০ দিনের কাজ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেন আদালতে। যেখানে দুর্নীতির এক স্পষ্ট চিত্র উঠে আসে। রিপোর্টে জানানো হয় ১০০ দিনের দুর্নীতিতে রাজ্যের তরফে টাকা উদ্ধার করা গিয়েছে। পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, মালদা এবং দার্জিলিং এই চার জেলা থেকে মোট ২ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্তও করা হয়েছে। ওই টাকা এখন রাজ্যের কাছে রয়েছে।
অন্যদিকে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে যাচাই কমিটি আরও জানায় যে ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় দল রাজ্য পরিদর্শনে এসেছিল। তাঁদের অভিযোগ হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, মালদহ এবং দার্জিলিং এই চার জেলায় ৫ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। এছাড়াও তাঁরা জানিয়েছিল, প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বঞ্চিত করে ওই টাকা অন্য ব্যক্তিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে গিয়েছিল।
রাজ্য ও কেন্দ্রের কাছে প্রশ্ন বিচারপতির
এরপর কেন্দ্রের কাছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম জানতে চান যে তবে কি ওই চার জেলা বাদে রাজ্যের অন্যত্র ১০০ দিনের কাজ শুরু করা যাবে? বাকি জায়গায় কাজ শুরু হলে কেন্দ্র কি পুনরায় ফান্ড দেওয়া শুরু করবে? সে বিষয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছে হাই কোর্ট। এছাড়াও রাজ্যকে হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে কেন জব কার্ড হোল্ডারদের বেকার ভাতা দেওয়া হবে না সেই রিপোর্ট পেশ করার। চলতি মাসেই এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই বেঞ্চ পরিবর্তন হল। যার ফলে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প মানলে অনিশ্চয়তা তৈরি হল।
আরও পড়ুন: মন্দারমণিতে হামলার ছক? ভয়ঙ্কর আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেফতার মালদার যুবক
অনিশ্চয়তার পথে মামলা
এতদিন এই মামলাটি কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে আলোচিত ছিল। কিন্তু সম্প্রতি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম সব জনস্বার্থ মামলা ছেড়ে দেন। সেই সময় এই ১০০ দিনের কাজের মামলাও ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। এরপর মামলাটি হাই কোর্টে মামলাটি ছিল বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার, এই মামলা ছেড়ে দেয় এই ডিভিশন বেঞ্চও। পরপর দুটি বেঞ্চ মামলাটি শুনতে না চাওয়ায় ফের থমকে গেল রাজ্যের লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের জীবিকার মামলার গতিপথ। এখন নতুন করে কোন বেঞ্চে এই মামলা ওঠে, তার দিকেই তাকিয়ে সকলে।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |