প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত ১৬ মে রাজ্যের DA সংক্রান্ত মামলায় (WB DA Case) সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল যে, কলকাতা হাইকোর্ট বা স্যাটের পূর্ববর্তী রায় অনুযায়ী রাজ্য সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘভাতার ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দিতে হবে। শুনানির দিন থেকে পরবর্তী ছ’সপ্তাহের মধ্যে শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশিকা পালন করতে হবে রাজ্য সরকারকে। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই রায়কে বুঝতে পারছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
সুপ্রিম কোর্টে মডিফিকেশন অ্যাপ্লিকেশন রাজ্যের
বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশের পরিমার্জন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হয়েছে। এবং এই আবেদনে রাজ্যের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে DA নির্ধারণের মাপকাঠি ঠিক কী। এছাড়াও সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার শীর্ষ আদালতের কাছে জানতে চেয়েছে যে কোন ভিত্তিতে, নির্দিষ্ট কতদিনের ও কত টাকার বকেয়ার উপরে এই ২৫ শতাংশের হিসেব করা হবে। তাই এই সকল প্রশ্নের ব্যাখ্যা চাইতেই সুপ্রিম কোর্টের কাছে মডিফিকেশন অ্যাপ্লিকেশন করা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের রায়ের কপি কর্মীদের
এদিকে সুপ্রিম কোর্টে এখন গরমের ছুটি চলছে, জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে আদালত খুলবে। মনে করা হচ্ছে, রাজ্য সরকার মডিফিকেশনের আর্জি পেশ করলেও তা নিয়মমাফিক শুনানি হতে আরও সময় লাগবে। এদিকে সরকারী কর্মী সংগঠনের ধারণা পুনরায় হয়ত সুপ্রিম কোর্টে স্পষ্টতার জন্য আবেদন করতে পারে রাজ্য। তাই সাধারণ সম্পাদক, মলয় মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য অনুযায়ী, তারা ট্রাইব্যুনালের রায়ের কপি রাজ্যের মুখ্য সচিব এবং অর্থ সচিবের কাছে জমা দিয়েছেন।
রাজ্যের অবস্থান নিয়ে ক্ষুব্ধ কর্মী সংগঠন
মলয় মুখোপাধ্যায়ের বিশ্বাস, রাজ্য সরকার যদি আলোচনার জন্য কর্মী সংগঠনের জন্য ডাকত, তাহলে রাজ্যের সুবিধা অনুযায়ী কীভাবে DA মেটানো সম্ভব, সেই নিয়ে একটি সুস্পষ্ট ধারণা দিতে পারত তাঁরা। তখন রাজ্য সরকার আইনি জটিলতার অজুহাত দেখাতে পারত না। অর্থাৎ মলয় মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “আমরা রাজ্যকে বুঝিয়ে দেব, সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।” সব মিলিয়ে তাদের এই বক্তব্য থেকে এটাই পরিষ্কার যে, তারা শুধুমাত্র নিজেদের দাবি নিয়েই সরব নন, রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতির চিন্তাও তাঁরা মাথায় রাখছেন।
আরও পড়ুন: অবশেষে হাঁফ ছেড়ে বাঁচল মধ্যবিত্তরা, অনেকটাই কমলো সোনা-রুপোর দাম! আজকের রেট
প্রসঙ্গত, রাজ্যের এই একতরফা সিদ্ধান্তের ফলে দুইদিকেই বেশ চাপ পড়ছে। একদিকে যেমন সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে, ঠিক তেমনই রাজ্যের কোষাগারের ওপর আইনি লড়াইয়ের বাড়তি চাপও পড়ছে। এখন দেখার বিষয়, রাজ্য সরকার কি কর্মচারী সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসে এই সমস্যা দূর করবে, নাকি সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্টতার জন্যই অপেক্ষা করবে। কিন্তু রাজ্য এবং কর্মীদের মধ্যে সম্পর্কের তিক্ততা বড় আকার নিতে চলেছে।