প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যের তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে (Taruner swapna scheme) একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয় রাজ্যে সরকারের তরফে। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে পড়ুয়াদের তালিকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর-সহ রাজ্যে শিক্ষা দপ্তরে পাঠানো হয়। সেই অনুযায়ী প্রকল্পের টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়। কিন্তু এই আবহে অভিযোগ উঠছে যে রাজ্য সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে ট্যাব কেনার জন্য বরাদ্দ টাকা কয়েকজন একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে না গিয়ে চলে যাচ্ছে অন্য অ্যাকাউন্টে।
অ্যাকাউন্ট থেকে Taruner swapna scheme-র লক্ষ লক্ষ টাকা গায়েব
কিছুদিন আগেই পূর্ব বর্ধমানের ২৮ জন পড়ুয়ার ক্ষেত্রে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট জায়গায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। সাইবার থানা ঘটনার তদন্ত শাখায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। পুরো বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে তারা। শুধু পূর্ব বর্ধমানই নয়, পূর্ব মেদিনীপুরেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ ও শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। শিক্ষা দরফতরের তরফে এই সকল ঘটনার FIR-ও করা হয়েছে ইতিমধ্যে।
ফের পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা?
তবে তদন্তের মাঝেই শিক্ষা দফতর এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে চলেছে। জানা যাচ্ছে যে সব পড়ুয়ারা টাকা হাতে পায়নি, তাদের সেই টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিকাশ ভবনের এক আধিকারিক জানান, ‘‘এখনও পর্যন্ত যে পড়ুয়াদের টাকা তাদের নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে পড়েনি, তাদের নতুন করে টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে। সে কারণে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াদের কাছ থেকে সঠিক তথ্য যাতে দফতরের কাছে এসে পৌঁছয়, তাই এই নির্দেশ।” নির্দেশের পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই DI-দের তরফে রাজ্যের সমস্ত স্কুলের প্রধানশিক্ষকদের নয়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি কোনও পড়ুয়া ট্যাবের টাকা না পেয়ে থাকে, তা দ্রুত জানানোর নির্দেশও এসেছে। আর যদি কারও টাকা যদি অন্যের অ্যাকাউন্টে চলে যায়, তা FIR করে জানাতে হবে বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ক্ষুব্ধ প্রধানশিক্ষক সংগঠনের একাংশ
কিন্তু এই ঘটনায় আবার পূর্ব মেদিনীপুরের চারটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সেখানকার DI এর পক্ষ থেকে থানায় FIR করা হয়েছে। অভিযোগ ভুল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নম্বর আপলোড করা হয়েছে ওয়েবসাইটে। যা নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে প্রধানশিক্ষকদের মধ্যে। প্রধানশিক্ষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “ টাকার বদলে সরকারের উদ্দেশ্য সাইকেল, ব্যাগ, স্কুল ড্রেসের মতো এটাও পড়ুয়াদের হাতে কিনে দেওয়ার। অবিলম্বে সরকার প্রধান শিক্ষকদের নামে এফআইআর প্রত্যাহার না করলে, শিক্ষা বহির্ভূত সমস্ত কাজ থেকে আমরা সরে দাঁড়াব।”
ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে, আর তাতেই জানা যাবে এটা হ্যাকিং, নাকি ভুল কোনও তথ্য দেওয়া হয়েছে, যার ফলে অন্যের অ্যাকাউন্টে টাকা চলে গিয়েছে। পাশাপাশি, অন্যান্য জেলায় বিভিন্ন স্কুলে একই ঘটনা ঘটেছে কিনা সেই তথ্যগুলোই DI এর মাধ্যমে পুনরায় জানতে চাওয়া হয়েছে স্কুলগুলির কাছে।